কোথায় উন্নত বিশ্ব?
সকলেই হয়ে গেছে অসহায়, নিঃস্ব।
এতদিন কিসের বড়াই করেছ?
এত যে সম্পদ গড়েছ,
আজ কী মূল্য আছে তার?
পৃথিবী পিছিয়ে যাচ্ছে বছর হাজার।
তিলে তিলে গড়ে তোলা এই সভ্যতা
প্রশ্নের মুখোমুখি অস্তিত্ব রক্ষার।
সব কিছু এলোমেলো একটি পলকে।
সবার অলকে এসে এক অণুজীব
পুরো পৃথিবীর কর্তৃত্ব নিয়েছে।
দিয়েছে ভেঙ্গে দম্ভ এই সভ্যতার।
তার কাছে মেনে নিচ্ছে হার
সুউচ্চ শিখরে দাঁড়ানো মানব জাতি,
রাতারাতি কাঁপছে থরো থরো
অদেখা সে' শত্রুর ভয়ে।
এ যুদ্ধ জয়ে প্রাণান্ত প্রচেষ্টা পৃথিবীর।
এমন কোন বীর কী আছে
রুখে দিতে পারে? যে মরণব্যাধি
ছড়িয়েছে পৃথিবীর 'পরে।
ঘরে ঘরে আশ্রয় নিয়েছে সকলে
গুহাবাসী মানবের মত।
জল, স্থল, অন্তরীক্ষে-
থেমে গেছে লক্ষ কোটি যান্ত্রিক যান।
সুনসান নীরবতা পৃথিবী জুড়ে।
থেমে গেছে প্রগতির চাকা।
বন্ধ বিদ্যাপীট, সকল নগর আর রাজপথ ফাঁকা।
থেমে গেছে আনন্দ উল্লাস।
অসহায় মানুষের দীর্ঘশ্বাস
ভারী হয়ে যাচ্ছে আকাশ, বাতাস;
যেন এক মৃত্যুপুরি।
এক তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে সকল অহংকার।
সভ্যতা ধ্বংসের সেই সব গবেষণাগার,
কোথায় মারণাস্ত্র?
কোথায় সাঁজোয়া যান, আণবিক বোমা,
রাসায়নিক অস্ত্রের ভাণ্ডার?
সেই সব হাতিয়ার
কি কাজে লাগছে এখন?
একে অন্যকে ধ্বংস করার
যে চক্রান্ত করতে পোষণ
তার আর নেই প্রয়োজন;
প্রকৃতির প্রতিপক্ষ আমরা সকলে।
কি লাভ হয়েছে সীমান্ত সুরক্ষা করে?
তাকে কি আটকাতে পারো?
বাসযোগ্য এমন পৃথিবী গড়ো
যেখানে সবার সম অধিকার।
ভেঙ্গে ফেল অস্ত্রের ভাণ্ডার;
বন্ধ করো শাসন, শোষণ,
বন্ধ করো শ্রণিবিভাজন।
ধর্মের দোহাই দিয়ে,
আদর্শের বুলি আউড়িয়ে
যেই বিভেদ সৃষ্টি মানুষে মানুষে,
ভেঙ্গেছে হৃদয়;
সেই উপাসনালয় বন্ধ হয়ে গেছে।
কেউ এসে শুনায় নাতো অভয়ের বাণী।
কেউ আসবে না, নিশ্চিত জানি।
ভালোবাসবে না মানুষ ছাড়া
মানুষে কখনো।
কোথায় রক্তের বন্ধন?
চারপাশে শুনা যায় ক্রন্দন, হাহাকার।
কে কার? অলক্ষ্যে হাজার মানুষ ছাড়ছে পৃথিবী
স্বজনহীন,
নীরবে, নিভৃতে প্রতিদিন।
মানব কল্যাণে যা যা প্রয়োজন।
তা-ই করতে হবে যে এখন।
আজ যারা মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
স্বজন হারিয়ে নিরস্ত্র যোদ্ধার মত,
মানুষ, মানবতা বাঁচাতে রত,
সেই সব মানুষেরই বড় প্রয়োজন।
স্বর্গীয় স্বপ্ন দেখো।
ইতিহাসের পাতায় লেখো নিজেদের নাম।
মুছে যাক সব দুর্নাম।
হিংসা, বিদ্বেষ ভুলে
চিত্তকে করো পরিশুদ্ধ।
বন্ধ করো সব অনাচার, বন্ধ করো যুদ্ধ।
দেখতে তো পাও-
পুরো পৃথিবী আজ
হয়ে গেছে অবরুদ্ধ।
এখনো সময় আছে-
সংযত হও। নতুন করে ভাবো।
আমরা কি এগিয়ে যাবো সামনের দিকে,
নাকি ব্যর্থতার দাসখত লিখে
পেছনে ফেরাবো মুখ?
তোমরা কি দেখতে পাচ্ছ-
প্রচণ্ড পরাক্রমে পৃথিবীর কর্তৃত্ব নিয়েছে
এমন অন্য কেউ, যে আমাদের নয়।
তবে কেন আমরা
আমাদের বিপক্ষে দাঁড়াব?
আরো অস্ত্র আছে তার,
যার একটি দিয়ে
পুরো সভ্যতাকে মুছে দিতে পারে।
তাই আর অস্ত্র নয়, বিভেদের ঝাণ্ডা উড়িয়ে কর্তৃত্ব নয়; মনে আঁকো এমন ছবি,
শান্তি, সহানুভূতি, মানবতা দিয়ে
গড়ে তোলব নতুন পৃথিবী।
এই হোক আমাদের শেষ অঙ্গীকার,
মানবজাতি
ঠিকে থাকার।