সংস্কৃত বা বাংলায় ব্যবহৃত "সাহিত্য" শব্দটির যথার্থ ব্যঞ্জনা literature শব্দটি বহন করতে পারে না। কেন? এর কারণ জানতে হলে শব্দ দুটোর আসল অর্থ জানা দরকার। literature শব্দটি ল্যাতিন literatura থেকে এসেছে। আবার literatura শব্দটি ল্যাতিন liter থেকে এসেছে। ল্যাতিনে liter মানে ইষ্টক বা ইঁট। প্রাচীন কালে ছাপাখানার অক্ষর আবিষ্কার হওয়ার আগে ইঁটের ওপর অক্ষরের ঢাঁচা তৈরী করে রোদে পুড়িয়ে ছাপানোর কাজে ব্যবহার করা হত। সেই অক্ষরকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা শিল্পশৈলীই literature। অর্থাৎ literature হল অক্ষর-কেন্দ্রিক শিল্প। অক্ষর ভিত্তিক লিখন কলাই মূল কথা। সাহিত্যের অর্থ কিন্তু আলাদা। শুধু মাত্র অক্ষরকেন্দ্রিক শিল্প গড়ে তুললেই হবে না সাহিত্যে হিতের ভাবনা থাকতে হবে। স-হিত বা হিতেন সহ ইত্যর্থে সাহিত্য। যে সাহিত্য জগদ্ধিতে কাজে লাগে না বা মানুষকে শিব ও সুন্দরের ভাবনায় উদ্বুদ্ধ করে না তা যত বড় literature হোক না কেন সাহিত্য নয়।
আজকের সমাজে অসংখ্য literature, সাহিত্য নগণ্য। অক্ষর নিয়ে আমরা এখন ব্যবসা করি, নাম-যশ, খ্যাতি প্রতিপত্তি লাভে উতলা হই, মানব কল্যাণের কথা কতটা ভাবি তা ভেবে দেখার বিষয়।
তিনিই প্রকৃত কবি-সাহিত্যিক যিনি literature ও সাহিত্যের মধ্যে একটা সমতা রক্ষা করে চলেন। যাঁর লেখা কাব্যগুণে অনন্য আবার কল্যাণ ভাবনায় অসাধারণ।