কামোন্মত্ত রাত্রি সঁপেছে তার বিবসিত শরীর
একজন কবি অথবা বর্গীকে।
কামুক বসনে ভ্রমরকবিও প্রস্তুত,
রাত্রির সাথে কবির এক নির্মল সঙ্গমে
পুনঃজন্ম নেবে কবিতা;
ভাবনার প্রজনন হবে।
কিন্তু হঠাৎ ব্যাথা ওঠে কবিবুকে,
দেয়ালে মাথা ঠুঁকে ঠুঁকে
কবি হাতে তুলে নিলো লৌহখাগ,
তারপর হচকা টানে বের করলো
ভেতরের হৃদপিন্ড !
অতঃপর তাতে খোঁদাই করে লিখলো-
"ভুল সব ভুল, তোমরা ভুল, আমি ভুল,
ভুলে ভরা আমার যত কাব্য-কলি,
ভুল তোমাদের গনতন্ত্র, জনসভা, মেনিফেষ্টো।
ভুল তোমাদের প্রেম, ইষ্টমন্ত্র, স্লোগান,
এমনকি তোমাদের অরুণিত মিছিল;
একমাত্র মানবপ্রেমতন্ত্র ছাড়া
তোমাদের সব ভুল, তোমরা ভুল।"
রক্তশূন্য শ্বেতদেহ ক্রমঃশ
বিনয়ের সাথে নুয়ে পড়লো মাটিতে,
সে সময় কবি চারপাশে শুধু
ভাঙ্গনের নিনাদ শুনতে পেল;
কবির আকস্মিক মৃত্য ঘটলো।
ঘোর ঘনকালো হয়ে উঠলো রাত্রি
পাখিদের ঘুম ভেঙ্গে গেল,
দূরে বেজে উঠলো প্রলয়শঙ্খ
তারপর ধেয়ে এলো সাইক্লোন;
নিমিষেই স্থিমিত হল কোলাহল
জনশূন্য হল অগণিত জনপদ।
কোলে প্রেম, অধরে মৃতপংক্তি,
পাশে প্রাণহীন পড়ে রইল
রক্তরঞ্জিত মৃতকবির দেহ;
যেন থেমে আছে নিষ্ঠুর প্রকৃতি,
বিধাতা লজ্জায় গুটিয়েছে মুখ।
হাতে রক্তমাখা পান্ডুলিপি,
প্রিয় খাগের কলম, পাতায় গুজে রাখা ফুল
সব পরে রইল, রাত্রিও পালালো।
পলাশ ফারাজী
ঢাকা, ১৭ আষাঢ়, ১৪২১ বঙ্গাব্দ।