প্রিয় মা,
আজও আদ্যিকালের শার্ট পরি আমি,
বুকপকেটটা বামে, হৃদয়ের কাছাকাছি।
কদিন হল ওখানটা ভারী ভারী লাগছে,
নীল কালির ক'খান শব্দ খোঁচাচ্ছে খুব!
এত নিশ্চুপ, এত শীতল আবেগ,
তোমার উঠোনের কলমীলতাদেরও ছুঁয়েছে কি কখনও?
শুধু এ'কটা শব্দ,
"রেখাকে একবার দেখে আসিস"
বৃথাই ভাবছ তুমি - ও আছে বেশ,
গায়ে আজও নাবালক সময়ের হরীতকী ঘ্রাণ!
আমায় দেখে খানিক চমকাল বোধহয়,
জানি, বছর দশেক অনেকটা সময়।
আমায় যে বড়দা বলত, তাও ভুলে বসে আছে।
তোমাদের ঘৃণা ভোঁতা হলেও ধার হারায়নি,
ওকে দেখেই বুঝেছি!
যাক, আমিও আছি বেশ।
ইউনিয়নের খ্যাপামি কমেছে।
বিপ্লব বিপ্লব বলে, রাসপুটিনের ঘরে নিয়েছি ঠাঁই।
নিজস্ব জতুগৃহে দেশালয়ের কাঠি ঠুকছি পাথরে।
রূপন্তীও আজকাল তোমার মত - নিশ্চুপ শীতল আবেগ!
হাঁড়ি ঠেলা ক্লান্ত প্রাণ এক।
বোঝোই তো বুর্জোয়ার বাগানের বোগেনভিলিয়া,
পানি না পেলেই শুকিয়ে যায়!
এসব নিয়ে অবশ্য ভাবি না খুব।
পেটে গুঁজে কিছু, মুখ বুজে পড়ে থাকি।
বছর দশেক বুকের বামপকেটে দেই নি হাত।
তুমি, বাবা, রেখা কারও অস্তিত্ব করিনি অনুভব!
রূপন্তীও শুধু শরীরে ছিল - অপ্রয়োজনীয় অস্থিরতায়!
তবু আজ, এ বুকপকেটে, আমার বছর দশেকের স্মৃতি।
তোমার কোমল হাতের নীলকালির শব্দ ক'খান,
"রেখাকে একবার দেখে আসিস"
এত নিশ্চুপ, এত শীতল আবেগ, যেন,
বেঁচে আছি বলে আমায় মনে করিয়ে দিল!
ভাল থেকো মা - ইতি তোমার খোকা।