একটু বিরতিতে গেলাসের অর্ধেক জল শেষ করে যদি উপন্যাসের পাতায় চোখ রাখি,
মিঠে স্বপ্নের জালক বোনা শুরু হয়ে যায় কড়িবরগার কাঠে।
অভ্যাসের একঘেয়ে নদীতে চাঁদের মৃদু আকর্ষণ অনুভূত হয়।
সোনালি পাল হাওয়ায় ওড়ে,
মুখবন্ধের কিনারায় দাঁড়িয়ে দূরে দেখি সরু দড়ির ওপর উল্কি আঁকা মেয়েরা "মাদারী কা খেল" দেখাচ্ছে।
ওটা কল্পনা ও পৃথিবীর সীমারেখা।
আমি এখন এই পারে,এই নীল নদীতে
ক্রমশ বেড়ে চলে রাত, রাতের জ্যোৎস্না,
নীল নদীতে পরের পর ভেসে ওঠে শব্দগুচ্ছ,চরিত্ররা ছড়িয়ে ছিটিয়ে।
এমন সময় হঠাৎ করে
স্বপ্ন জালে আটকা পড়ে
একটা ফড়িং যদি ছটফট করে,
চাঁদের কালো পাহাড় ত্রিকোণ শৃঙ্গ নিয়ে ধেয়ে আসে সব আলোকে আড়াল করে,
মাতাল ঢেউ তখন শব্দ নয়,নিখাদ রঙ্গমঞ্চ
চরিত্র দের একমুখী দৃষ্টি তখন আমার দিকে,
আমার হাতের এই রূপোলি তরবারির দিকে,
যার অগ্রভাগ মাটিতে আড়ষ্ট হয়ে অপেক্ষা করছে ধেয়ে আসা পাহাড়টার।
ফড়িংটা ছটফটিয়ে গেলাসের জলে এসে পড়ে
স্বপ্নের সকল মিষ্টতা ডানায় মেখে,
ধীরে ধীরে গেলাসের গা বেয়ে ওপরে উঠে আসে,
ওর গায়ে রামধনু রং,গেলাসে কালি
গুটি গুটি পায়ে হাঁটে উপন্যাসের পাতায়।
আমি বোতাম টিপে পাতা উল্টে দিচ্ছি,
ক্রমশ এগিয়ে চলেছি মোহনা সঙ্গমে,
যেখানে এই তরবারির অপেক্ষা করছে জাহাজী বণিক,এক অখ্যাত কবি,
তার ক্ষীণ কন্ঠস্বরে ভেসে আসে চাঁদের রোশনাই এ:
'তুমি নীল সমুদ্র
তোমার অতলতার রহস্যটুকু
যা জানে না সূর্যের আলোও
জানতে চাই না আমিও
সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ খুঁড়ে
উন্মুক্ত আয়নায় দাঁড়ানো কোনো মিশরীয় নারীর চোখের অস্পষ্ট কারুকার্যে ।'