আমার গল্পটি ছিল সুকল্যাণকে নিয়ে ,
তেরো বাই চার,পুণ্যভিলা,পাহাড়গঞ্জ রোড
সেই ছিল তার বাড়ি।
একান্নবর্তী পরিবার, ভরা সংসার।
আমি ছিলাম তার দর্শক তথা লেখক
যতদিন জীবিত ছিলাম,
সে ও তার বাড়ির সকলের চোখের চাহনিটা পর্যন্ত নানা ভূমিকায় লিখেছি,
কত পাতা ভরেছে চলন-বলন, রূপ বর্ণণায়।
ঠান দি শীতের রোদ্দুরে গা এলিয়ে আচারের লঙ্কা শুকোচ্ছে
সুকল্যাণ ও বাড়ির ছেলেরা কিতকিত কিংবা ঘুড়ি লাটাইয়ে ব্যস্ত
মেয়েরা উল বুনছে,
এমন এক দৃশ্যে...
যেদিন আমার মৃত্যু হল, সেদিন সুকল্যাণের বয়স গেল থেমে
তারপর কত দিন, বছর বা যুগ পরে পরে আমার পুনর্জন্ম হয়েছে
তার হিসেব জানি না,
তবে প্রতি জন্মেই সুকল্যাণকে দেখেছি লাটাই হাতে,
ঘুড়ির দূরত্ব মাপা যায় না,
সুতো ঝুলে মাটি ভেদ করে নীচে চলে গেছে,
ঠান দির আচারে ছত্রাক ধরেছে
উলের বুনন ছাদ পেরিয়ে, পাহাড়গঞ্জ রোড পেরিয়ে, সমুদ্র পেরিয়ে পৃথিবীকে জড়িয়ে ফেলেছে অপরিমেয় উষ্ণতায়।
প্রতি জন্মে চেষ্টা করেছি গল্পটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার,
কিন্তু সুকল্যাণের সৃষ্টিকর্তা যে আমি তা প্রমাণ করতে করতেই আবার মরে গেছি।
এখন সুকল্যাণের সত্বাধিকার আর আমার নেই,
যেমন খুশি সাজো'র মঞ্চে সে সবথেকে বিখ্যাত চরিত্র
যে কেউ তাকে যেমন খুশি সাজাতে পারে
তার বাড়িকে নানা আকৃতিতে গড়তে পারে,
ইচ্ছেমতন তার নামকরণ করতে পারে,
তার লাটাইয়ের প্রস্তরীভূত সুতোয় নিজের আঙুল বেঁধে বাতাসের টান অনুভব করতে পারে।
সুকল্যাণ আর কোনোদিন বৃদ্ধ হবে না।
নানা মুখোশে রং চড়িয়ে ও এখন রঙ্গমঞ্চের সবচেয়ে দামি ক্লাউন
স্বাভাবিকভাবেই নিষ্প্রাণ, নির্বিরোধী ।