“ আজ আমাদের ন্যাড়াপোড়া
কাল আমাদের দোল,
পূর্ণিমাতে চাঁদ উঠেছে
বলো হরিবোল “ ।
আনন্দের এই মন্ত্রধ্বনি
বলতো ছিল কেন ?
চাঁচড়, মানে ন্যাড়াপোড়া
উৎসব ছিল যেন ।
লাগতো যেসব, আহামরি নয়
পয়সা তো নয় মোটেই,
শুকনো পাতা, গাছের ডাল
কেল্লাফতে তাতেই ।
শক্ত খুঁটি পুঁতে, তাতে
জড়িয়ে দিতাম পাতা,
মাটির হাঁড়ি চোখ-মুখ এঁকে
তৈরী বুড়ির মাথা ।
বুড়ির ঘর তৈরী হলে
দাঁড়িয়ে যেতাম সবাই,
ভিতরে তার আলু দিতাম
বেগুন গোটা-গোটাই ।
লাগিয়ে আগুন উঠতাম গেয়ে
ন্যাড়াপোড়ার গান,
হাওয়ায় হাওয়ায় বহ্নিশিখা
তখন লেলিহান ।
নিভলে আগুন নিতাম খুঁজে
কোথায় আলু, বেগুন
মাখতাম তাকে লঙ্কা দিয়ে
সঙ্গে তেল আর নুন ।
কি দারুন স্বাদ যে তার
আজো মুখে লেগে আছে,
আজকের যত দামি খাবার
তুচ্ছ যে তার কাছে ।
পরদিনটাই দোল, তার
প্রস্তুতি সেরে নিতাম,
আবীর-রঙ-পিচকারি, সব
কাছেতেই রেখে দিতাম ।
আজ তোমাদের কত আনন্দ
দেখি কিনে নিতে হয়,
কৃত্রিমতায় ভরা সেইগুলি
প্রকৃতিকে নিয়ে নয় ।
প্রকৃতি আরেক মা আমাদের
যত্নে রেখো তাই,
দেখবে কত আলাদা, মায়ের
কোলের মজাটাই ।