পথে ঘুরছি আমি কাল-কালান্তরে যাযাবরের মতো
তেপান্তর পেরিয়ে সমুদ্র পর্বতগিরি দিগন্তের ও পাড়ে, সমতলের ধারে
ঘুরে ঘুরে অবিশ্রান্ত আরাকানের পলে পলে
নীলগিরির উঠেছি, মেঘে ভেসেছি, মেঘ ছুঁয়েছি।
পাহাড়ে একাকী নিথর পৃথিবী মায়াবী নিভৃত রাত্রি
নিরবচ্ছিন্ন পাথর কোটরে অশান্ত দেহ
চারিদিক সারি সারি শিলাখণ্ড, আমি যুগের জীবন্ত ফসিল
অহর্নিশ ঘোরে আমারে ক্ষণিক সুখ দিয়েছিল সে-
পাশে আঁচল পেতে বসে; তনু লতা মুরং।

শুধু একখানি আঁচলে দেহখানি তার - রূপকথার রোমান রমণী
বদন তার কচিলতা ডগার মতন, কাজল কালো আঁখি।
কৃষ্ণ চাঁদের ম্লান আলোয় দেখেছি তারে
জীবন প্রান্তে এসে কেউ যদি পায় চিরকাল বেঁচে থাকার সে অমৃত সংবাদ
তেমনি শুনেছিলাম, শুধাইয়াছিল সে - খুব ক্লান্ত বুঝি?
হরিণীর ছলছল চোখে; তনু লতা মুরং।

যুগ যুগান্তরে আমরা পাথর মানব-মানবী বেঁচে আছি
শতাব্দী থেকে শতাব্দী বহে নিস্তব্ধতায়
সময় স্তদ্ধ তবুও আঁধার কেটে যায় -
পৃথিবীর সব কোলাহল থেমে গেলে আমাদের মুক্তি
আমাদের অনন্ত জীবন, আমাদের স্বস্তি।
তার কোলে মাথা, চোখে চোখ, হাতে হাত
তার ঠোঁটে মৃদু হাসি, আমরা পরস্পর মুখোমুখি।।
                                                              
(২৩/১২/২০১২ প্রথম প্রহর, টেকনাফ)