আমি বুড়ো হয়েছি
ঠিক সময় বয়স শরীরে পড়ে
গায়ে ষাট বসেছে বলে সাময়িক রেহাই পেয়েছি
বোঝার দায়ে কেউ রাখেনি আমায় ধরে ।
নিজের পছন্দে মেয়ে প্রেম করেছে বিয়ে করেছে দিয়েছে
বিদেশ পাড়ি ।
সঙ্গে থাকার জ্বালা বলে ছেলেও চাকরি নিয়ে বেঁধেছে অন্যত্র
বাসা বাড়ি ।
অবশ্য বাদ পড়ে না ছেলের
মাস গেলে খরচ বাবদ মায়ের হাতে
ভরণপোষণের পাওনা ফেলে যেতে ।
সুচরিতা
এখন আমার কবিতার সংসারে
হেঁশেলে বসে সুচরিতার হাত পোড়ে রান্নার স্বাদ বাড়ে
কাজের কাগজপত্র যত্রতত্র রেখে ভুলে যায় বারে বারে ।
ফাঁকা ঘরের ভেতর দেওয়ালের পিঠে হাত রেখে
বাঁধানো ফ্রেমে শিশুসুলভ ছেলে মেয়ের মুখ দেখে
জমে থাকা ধুলো ঝেড়ে নিজের আঁচলে মুছে শান্তি পায় ।
দুচোখ ধুয়ে মায়ের বক্ষ ফাটে ঠোঁটের নিঃশব্দতায় ।
রোজ সূর্য ওঠে রোজ সূর্য ডোবে
নিয়ে আমার আকাশি ভোর আমার আকাশি সন্ধ্যা ।
সুচরিতার সময় কাটে শুয়ে বিছানায়
এখন ঈষত্ কথাকোপন শুধু ইশারায়
সুচরিতা স্নান সেরে কৌটো খুলে সাবধানে সিঁদুর তুলে
সিঁথির সরণি রাখে ভিজিয়ে আঙুলে
মন্ত্রমুগ্ধ দুহাতে ফুল রেখে পুজোর ঘরে দুচোখের অশ্রুপতন বুকে ধরে
ছিঁড়ে অতীতের পাতায় কি যেন খুঁজে বেড়ায় হয়তো বা উজ্জীবন ।
দুপুরের রোদ নিস্তেজ হয়ে এলে
সুচরিতা রোজকার মতো আমায় ডেকে পাশে
তার গলায় ভেসে ওঠা গানের আদ্রতায়
আমার শরীর ভাসায় নিয়ে রোজ এক নতুন জীবন ।
বিকাশ দাস / মুম্বাই