এক মাত্র তুমি আমায়
দিতে পারো মুক্তি
অথচ তোমার কথার ভম্গিমায় আমার অফুরান উত্সাহ
অঘোর অভিব্যক্তি ।
তুমি মৃত্যুর র মতো জটিল বা ভয়ানক নও ;
তুমি ভেদাভেদ শূন্য প্রজ্ঞাত মনের অদ্ভুত স্বান্তনা
তুমি কামনার মিথুন আঙ্গিনায় ছড়ানো
মিথ্যা ফুলের প্রলোভন নও।
তুমি তমসাবৃত ভীরু অন্ধকার ছায়া নীড় নও
তুমি সাজানো গোছানো পরিছন্ন জীবন খোলশের আবর্জনা নও
তুমি আমার কল্পনার দোলনায়
মিছি মিছি বা অহেতুক দুলে যাওয়া বিছেদ
বা অবিশ্বাসের যাতনাও নও।
তুমি আমার মহা কাব্যের
নেশায় পাগল করা মাতাল গদ্য ছন্দ
তোমাতে আমি বাঁধা নই
তবু চলে আসার দিনে অশ্রু জল
চোখের কোনে জমতে দেখেছি
অদ্ভুত মোহ টানে আষ্ঠে পৃষ্ঠে জড়িয়ে আছি
এক অসীম মিলনের মত্ততায় তোমার
দেহের দোর গোড়ায় দাঁড়িয়ে
গাঢ় আলাপ প্রলাপের ছলে ক্ষনিকের মতো
বাঁধা থাকার মতো মন
অন্তত তোমার কিছুতেই সাড়া দেয় না ।
শুধু নিজস্ব প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে
ভালবাসার স্বীকৃতিকে দেহের মধ্যে বন্দির ছলে
সন্ধির অজুহাতে আবদ্ধ রাখতে তুমি অধীর নও
তুমি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে
বয়ে যাওয়ার মতো বহমান নও।
তুমি মুক্তমনা নিজস্ব রুচিতে স্থির বা অস্থির গতিময় লমহা
খোদার দেওড়িতে তোমার নত জানু দেহে
দুর্বলতার প্রকাশ থাকলেও জাগতিক দুর্বলতার বিষ কামড়ে
তোমার দেহ নীল শূন্য অদ্ভুত তোমার বোধশক্তি ।
তুমি অদ্ভুত নাচের ছন্দ মাখানো
অলৌকিক রূপসী নারীও নও ।
তুমি বৃষ্টি হানা নীল আসমানের কালো মেঘও নও ।
তুমি কারো হৃদপিন্ড ভেঙ্গে দেওয়ার মতো সর্বনাশী চাঁদ ভাঙ্গা চুম্বন নও ।
তুমি তপ্ত অন্ধকারে ভয় তরাসের নিঠুর বাঁশির তানও নও ।
তুমি আলিঙ্গনের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা স্পর্শ কাতর বক্ষও নও ।
তুমি সহসা খসে যাওয়া কারো অহংকার ও নও।
তুমি আমার অসম্পাপ্ত কবিতার বাকি শব্দ মালা ।
তুমি ডুবে থাকা স্বস্তির নিস্ব্চল ভালবাসার আবেগবালা ।
তুমি অমাবস্যার ঘোর ব্যাদড়া অন্ধকারের
গোপন ঝিনুকে ঘুমিয়ে থাকা শীতল গোমেদ চাঁদ ।
তুমি দৃষ্টিহীন লক্ষ্য বিহীন অসম্ভব অঙ্গীকারের দু হাত বাঁধা দৃষ্টান্ত নও ।
তুমি স্বয়ং শ্বশান বন্ধুর চিতা
চিতার লেলিহান আগুন নও ।
তুমি কুল ভাঙ্গা কারোর নিখাদ গোছানো সংসারে
নিকৃষ্ট আঘাদ নিনাদ নও ।
তুমি একান্ত গোপনে টুকরো টুকরো ভেঙ্গে যাওয়া
নিশব্দ মাঝ রাত নও
তুমি মুখোমুখী বসে থাকা মিথ্যে উপচে পড়া
অনর্থক প্রেমালাপ নও ।
তুমি মহা সত্য তীর্থ মৃত যোগ ।
তুমি আমার সব হারানোর ফিরে পাওয়া
স্মৃতির অভ্যন্তরে সৃষ্টির গুলজার ।
মৃত দেহের চার পাশে ফুল ছড়ানো
নীরব উক্তিহীন মধুর কোমল ভাবময় সফেদ কফন ।
তুমি মনে রাখার মতন প্রতিদিন
তুমি না বদলানোর মতন অদ্ভূত নিখুঁত সমীকরণ ।
আঁচর বিহীন বেদাগ পাক আমন ।
তুমি কারোর দেহে গোপুর দ্বারে
যন্ত্রনাময় কঠিন জর্জর ব্যাধি নও ।
তুমি তোয়াক্কা বিহীন তোয়াজ বিহীন খোশামদের তোশিদ অলীক
প্রেমের তোশদান নও।
তুমি কারোর সন্ত্রপ্ত ললাটে ঝরে যাওয়া ঘাম নও ।
তুমি কারোর ভরসায় কেঁপে ওঠা তন্ন তন্ন ছিঁড়ে
ফেলার মতন বজ্র নিনাদ নও ।
তুমি আচমকা ঘটে যাওয়া কারোর সহজ সরল জীবনে
মহাকালের জরঠ বিধান নও ।
তুমি আমার সঙ্গিনী আমৃত্যু কালের চির কালের মতো নবীন
অপ্রত্যাশিত আমার সাকার কল্পনার ভালবাসার ইতিহাসে
তুমি এক মাত্র সাক্ষী ।
তুমি পুঁথির নিয়ম বাঁধা যুক্তি তক্ক নও
তুমি কামনার অপরাধ বোধ ও নও ।
তুমি প্রিয়জনের
একান্ত অনুভব চেতনা অবচেতনার মনের সঙ্গম ।
তুমি ধৈর্যচ্যুত মাটির পুতুল নও ।
তুমি কারোর রাঙ্গা নরম গাল ভিজে যাওয়া অশ্রু জলও নও ।
তুমি অবুঝ মনের চঞ্চলতা নও ।
তুমি শিল্পীর মিথ্যা তুলিটান নও ।
তুমি সাংসারিক জীবনের এক ঘেয়েমির চাপে তিক্তময় বাক্যালাপ নও।
তুমি উদ্ধত আকাশের বীতশ্রদ্ধ বিধগ্ধ সবিতৃ ।
তুমি ক্ষমতার প্রবল ঝড়ে সৃজন স্রোতের প্রাবর নও।
তুমি মহা জাগতিক বিধানের কোনো বন্ধন নও।
তুমি বৈধব্যের শুভ্র চির সূচি বসন নও ।
তুমি বিচারের অবিচার বাণী নও ।
তুমি সদ্য দুল্হনের সিত্চন্দনে ঢাকা লাজ্ময় নাকাব ।
তুমি সত্য টুকুর মতো মহা সত্য আমার কল্পনার সংহিতায় ।
তুমি অসীম জ্ঞানের রহস্যময় আকর্ষণ ।
তুমি সাহিত্যর সাধনার আরাধ্য আরাধনা ।
তুমি বাহিরী সৌম্যতার মোহ নও ।
তুমি কারোর চরণ ধূলি নও ।
তুমি কারোর মরণ শোভা যাত্রা নও ।
তুমি কোনো ইঙ্গিতের মিথ্যা গীত নও।
তুমি সীমানা জুড়ে একাকার হয়ে যাওয়া আমার দেহ মনে
জাগিয়ে রাখা
কঠিন আত্ম বিশ্বাসমাখা জীবন দলিল গোপনে ।
বিকাশ দাস / মুম্বাই