আশ্বিন মাসে শরতের আকাশে নীল সাদা মেঘে আচ্ছন্ন
হিমেল মৃদু হাওয়ায় কাশফুলের দোলায় প্রকৃতির লাবণ্য।
শিশিরের সরসে নন্দিত দূর্বাঘাস।
শিউলি ফুলের বিনোদিত সুবাস।
চতুর্দিকে আনন্দ-সম্প্রীতির হৃদয়মগ্ন আগমনী সুরের আলাপন
নতুন বর্ণছন্দে পুনর্মিলনের উচ্ছ্বাস। শস্যপূর্ণ-মাটির আস্থাপন।
দেবী দুর্গার বহুরূপের বিশেষ নয়টি রূপ ভিন্ন ভিন্ন নামে নিদির্ষ্ট লগ্নে পূজিতা।
দেবী নবদুর্গা আদ্যাশক্তির অন্যরূপ মাতৃরূপে, শক্তিরূপে মর্তলোকে আবির্ভূতা।
দেবী দুর্গা সমস্ত রূপে মহাশক্তির আধার।
দেবী দুর্গা অভয় প্রদায়িণী প্রকৃতি অপার।
দেবী নবদুর্গার প্রতিটি শক্তির মৃন্ময়ীরূপ দর্শনের অধীর বাসনায়
এ’পুণ্য তিথিতে সমস্ত চরাচর যেন আজ আনন্দোচ্ছল আরাধনায়
শঙ্খধ্বনি উলুধ্বনি ঢাক ঢোল কাঁসর ঘণ্টা মন্দিরার ঝনৎকার
দেবী নবদুর্গার শক্তির বন্দনায় নিমগ্ন সমস্ত জগৎ ঘর-সংসার।
মা দুর্গার নয়টি রূপের নামকরণ করেন স্বয়ং ব্রহ্মা।
প্রথমং শৈলপুত্রীতি দ্বিতীয়ং ব্রহ্মচারিণী ।।
তৃতীয়ং চণ্ডঘণ্টেতি কুস্মাণ্ডেতি চতুর্থকম্ ।।
পঞ্চমং স্কন্দমাতেতি ষষ্ঠং কাত্যায়নী তথা ।।
সপ্তমং কালরাত্রীতি মহাগৌরীতি চাষ্টমম্ ।।
নবমং সিদ্ধিদাত্রী চ নবদুর্গাঃ প্রকীর্তিতাঃ ।।
শৈলপুত্রী
নবদুর্গার শক্তির প্রথম রুপ পর্বত কন্যা দেবী শৈলপুত্রী। গিরিনন্দিনী পার্বতী রুপেও পরিচতা। দেবী শৈলপুত্রী দ্বিভুজা। শৈলজা নামেও পরিচিতা। দেবী শৈলপুত্রী অসীম শক্তির প্রতীক। দেবীর দক্ষিণ হস্তে ত্রিশূল। বাম হস্তে প্রস্ফুটিত পদ্মফুল ।
জটামণ্ডিত মস্তক। দেবী শৈলপুত্রী শুলধারিণী নামেও পরিচিতা। বৃষ পৃষ্ঠে বিরাজমান বলেই বৃষরুদ্ধা নামেও বিদিতা। পূর্বজন্মে সতী দক্ষ রাজার নন্দিনী । দেবাদেব শিবের পত্নী।
দক্ষ কন্যা সতী দেহ ত্যাগের পরে পরজন্মে পিতা গিরিরাজ হিমালয় ও মাতা মেনকার ঘরে পার্বতী রুপে দেবী মহামায়া আবির্ভূতা। দেবী শৈলপুত্রী হৈমবতী নামেও পরিচিতা। পুরাণ মতে অসুরের অত্যাচারে দেবতারা বারংবার পরাজিত হলে তাঁরা ব্রহ্মার শরণে যান । ব্রহ্মার পরামর্শে দেবতাদের কঠোর তপস্যায় দেবী ও মহাদেবের মিলনে শৈলপুত্রীরুপে আবির্ভূতা। শিব ও শৈলপুত্রীর মিলনে কার্তিকের জন্ম এবং দেবতাদের সেনাপতি হয়ে তারকাসুরকে বধ করে স্বর্গ থেকে অসুরদের বিতারণ করেন।
মঙ্গলময়ী, করুণাময়ী, মমতাময়ী দেবী শৈলপুত্রীর পূজা উপাসনায় সুখ প্রাপ্তি ও সমস্ত বিপদ থেকে মুক্তিলাভ।
বন্দে বাঞ্ছিতলাভায় চন্দ্রার্ধকৃতশেখরাম্।
বৃষারুঢ়াং শূলধরাং শৈলপুত্রী যশস্বিনীম্ ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মা শৈলপুত্রী রূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ ॥
ব্রহ্মচারিণী
মা দুর্গার নবশক্তির দ্বিতীয় রূপ ব্রহ্মচারিণী। তপশ্চারিণী নামেও পরিচিতা। দেবী ব্রহ্মচারিণীর জ্যোতির্ময় রুপ অভূতপূর্ব সৌন্দর্যের প্রতীক স্বরূপ। দেবী ব্রহ্মচারিণী চতুর্ভুজা। সংযমী ভাব সম্পন্না। মৃগচর্মের উত্তরীয় পরিহিতা।
দেবীর দক্ষিণ হস্তে মোক্ষদানকারী জপ মালা। বাম হস্তে কমণ্ডলু ও অভয়দানকারী বরদ-হস্তা। শুভ্রবস্ত্র পরিহিতা ও স্নিগ্ধতপস্বিনী।
রুদ্রাহ্ম দেবীর অঙ্গভূষণ। সহস্র বছর নির্জলা, নিরাহার তপস্যায় মগ্ন ছিলেন বলে দেবী দুর্গা 'অর্পণা' নামেও পরিচিতা। যোগিনী তপস্বিনী কঠিনতম তপস্যা থেকে বিরত রাখার জন্য দেবী দুর্গা মহামায়া ‘উমা’ নামেও পরিচিতা। দেবী ব্রহ্মচারিণী ব্রহ্মাকে স্বয়ং জ্ঞান প্রদান করেন। ব্রহ্মা অভিভুত হয়ে দেবী ভগবান চন্দ্রমৌলি শিবকে পতিরূপে পাওয়ার জন্য বর প্রদান করেন। মা ব্রহ্মচারিণী মনোসংযোগ বৃদ্ধি কারিণী। বেরাগ্য ও ব্রম্ভজ্ঞান প্রদানকারিণী। আনন্দময়ী, সুখদায়িনী।
দধানা করপদ্মাভ্যামক্ষমালা কমণ্ডলুম্।
দেবী প্রসীদতু ময়ি ব্রহ্মচারিণ্যনুত্তমা।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মা ব্রহ্মচারিণী রূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ ॥
চন্দ্রঘণ্টা
মা দুর্গার নবমশক্তির তৃতীয় রুপ চন্দ্রঘণ্টা। দেবীর ললাটে অর্ধাকৃতি চন্দ্র শোভিতা বলে দেবী দুর্গা চন্দ্রঘণ্টা নামে পরচিতা। দেবীর স্বর্ণের মত উজ্জ্বলময়ী। চন্দ্রের মত লাবণ্যময়ী। দেবী চন্দ্রঘণ্টা দশহাত বিশিষ্টা । ব্যাঘ্রচর্ম পরিহিতা। গজচর্মের উত্তরীয় পরিহিতা। মুণ্ডমালাধারিণী। যুদ্ধ উদ্যত রণচণ্ডী নামেও পরিচিতা। দেবী চন্দ্রঘণ্টা পরম কল্যাণকারী।
দেবীর দশ হস্তে কমণ্ডলু , তরোয়াল , গদা , ত্রিশূল , ধনুর্বাণ , রক্তপদ্ম , জপ মালা ডমরু,শঙ্খ, বরাভয় মুদ্রা। দেবীর বাহন সিংহ। দেবী ঘণ্টার প্রচন্ড রণচন্ড ধবনিতে প্রকম্পিত করে সমস্ত দুরাচারী দানব , দৈত্যের সব অশুভ শক্তির নিরস্ত্রকারিণী। দেবী চন্দ্রঘণ্টার উপাসনায় মনে শক্তি উপলব্ধি হয়। সব আসুরিক বৃত্তি নষ্ট হয়।
পিণ্ডজপ্রবরারুঢা চণ্ডকোপাস্ত্রকৈর্যুতা ।
প্রসাদং তনুতে মহ্যম্ চন্দ্র ঘণ্টেতি বিশ্রুতা ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মা চন্দ্রঘণ্টা রূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ
কুষ্মাণ্ডা
দেবী পার্বতীর নবশক্তির চতুর্থ রূপ "কুষ্মাণ্ডা"। দেবী জগতের সমস্ত দুঃখ গ্রাস করে নিজের উদরে ধারণ করেছিলেন বলেই তিনিই ‘কুষ্মাণ্ডা’ নামে পরিচিতা। দেবী কুষ্মাণ্ডা ত্রিনয়নী। দেবী কুষ্মাণ্ডা সংসারের ত্রিবিধতাপ হরণকারিণী রুপে আবির্ভূতা। দেবী কুষ্মান্ডা পর্বতবাসিনী সিংহবাহিনী অষ্টভূজা। অমিত শক্তির অধিকারিণী। নবরাত্রির চতুর্থী তিথিতে মাতৃপ্রাণ কুষ্মাণ্ডা আদ্যাশক্তিকে আহ্বান করেন। দেবীর দক্ষিণ হস্তে সুদর্শন চক্র, ধনুর্বাণ, রক্তপদ্ম, কমণ্ডলু, বাম হস্তে অমৃতপূর্ণ কলস।
সুখ ও সমৃদ্ধি প্রদানকারিণী।
সুরাসম্পূর্ণকলশং রুধিরাপ্লুতমেব চ।
দধানা হস্তপদমাভ্যাং কুষ্মাণ্ডা শুভদাস্তু মে।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মা কুষ্মাণ্ডা রূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ
স্কন্দমাতা
মা দুর্গার নবরাত্রির পঞ্চম রাতে দেবী পার্বতী স্কন্দমাতা রূপে পূজিতা। দেবীর গাত্রবর্ণ স্বর্ণের মতো উজ্জ্বল। নানা অলঙ্কারে ভূষিতা। দিব্যবস্ত্র পরিহিতা। প্রসন্নবদনা। চার হাত বিশিষ্টা। দক্ষিণ হস্তে কার্তিকেয়। আর এক দক্ষিণ হস্তে প্রস্ফুটিত পদ্মফুল । বাম হস্তে বরাভয়। দেবী সিংহ বাহনে উপবিষ্টা। প্রস্ফুটিত কমলে পদ্মাসনা। দেবী স্কন্দের জননী। স্কন্দমাতার আরাধনায় সমস্ত মনোস্কামনা পূর্ণতা লাভ হয়। স্কন্দমাতা মোক্ষের দ্বার উন্মুক্তকারিণী দেবী রুপেও পূজিতা।
সিংহাসনগতা নিত্যং পদ্মাশ্রিতকরদ্বয়া।
শুভদাস্তু সদা দেবী স্কন্দমাতা যশস্বিনী।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মা স্কন্দমাতা রূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ
কাত্যায়নী
মা দুর্গা নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে কাত্যায়নী রুপে আরাধিতা। দেবী কাত্যায়নী হরিদবর্ণা। মনিময়কুণ্ডল শোভিতা। ব্যাঘ্র পৃষ্ঠে উপবিষ্টা। অষ্টভুজা।শঙ্খ, চক্র, অসি,যষ্ঠি , বাণ,ধনু,শূল ও তর্জনী ধারণ করে আছেন। মস্তকে চন্দ্র। দেবী কাত্যায়নী কন্যারুপা।
কাত্যায়ন ঋষি এক পুত্রের একটি কন্যসন্তান লাভের জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেন | দেবী পার্বতীর তপস্যা করে তিনি অভীষ্ট পূর্ণতা লাভ করেন | ঋষির স্তবে তুষ্ট হয়ে স্বয়ং দেবী পার্বতী জন্ম নেন মহাঋষি কাত্যায়নের কন্যা রূপে। ঋষি কাত্যায়ন নিজের মানস থেকে দেবীকে সৃষ্টি করেছিলেন বলে ‘কাত্যায়নী’ নামে পরিচিতা। দেবী পার্বতী কাত্যায়নী রূপ ধারণ করে মহিষাসুরকে বধ করেন। দেবী কাত্যায়নী বৃন্দাবনে গোপবালা রূপে পূজিতা। ব্রজের গোপবালারা দেবীর কাছে জানিয়ে ছিলেন নন্দের নন্দন শ্রীকৃষ্ণকে পতিরূপে পাওয়ার অভিলাষ। তাই ব্রজের মাতা দুর্গার নাম কাত্যায়নী। দেবী কাত্যায়নীর উপাসনায় ইচ্ছামতো বর লাভ হয়।
চন্দ্রহাসোজ্জ্বলকরা শার্দূলবরবাহনা।
কাত্যায়নী শুভং দদ্যাদ্দেবী দানবঘাতিনী।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মা কাত্যায়নী রূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ
কালরাত্রি
নবদুর্গার সপ্তম রূপ কালরাত্রি। কৃষ্ণবর্ণা রুপে আবির্ভূতা।দেবী কালরাত্রি চতুর্ভুজা। ভীষণদর্শনা শত্রুর দিকে আলুলায়িত কেশে ধাবিতা। দেবীর বাহন গর্দভ। দেবী কালরাত্রি রণচণ্ডী নামেও পরিচিতা। দেবী কালরাত্রি কখনও কালী নামেও পূজিতা।
কণ্ঠে বিদ্যুৎ মালিকা | ত্রিনয়নী দেবীর শ্বাস প্রশ্বাসে অগ্নির হলকা | দেবীর তিন হস্তে অস্ত্র নির্ভীকতার প্রতীক। এক হস্তে বরাভয় | বিচিত্র আভরণ বিশিষ্টা, দিব্য তেজঃপুঞ্জধারিণী, দিব্যবস্ত্র, দীপ্তকাঞ্চন প্রভাবিশিষ্টা। দেবী সারল্য ও কাঠিন্যের অপূর্ব সমাবেশে সমাহিতা। মহাপ্রলয় কালে এই রাত্রিরূপিণী মাতার কোলেই বিলয় হয় বিশ্ব চরাচর। চণ্ড ও মুণ্ডের হত্যা করেন বলে দেবী কালরাত্রি চামুণ্ডা নামেও পরিচিতা। দেবী কালরাত্রি দুষ্টের দমনকারিণী। অশুভ গ্রহের খণ্ডনকারিণী। অনন্ত মহাকাশে নৃত্যরত কাল ভৈরবের দেহ থেকেই আবির্ভূতা দেবী যোগনিদ্রা মহাকালিকা নামে পরিচিতা। | দেবী কালরাত্রি একদিকে করুণাময়ী জননী আর অন্যদিকে ভয়ঙ্করী। সর্বদা শুভ ফল প্রদান করেন বলে শুভঙ্করী নামে ও পরিচিতা।
একবেণী জপাকর্ণপুরা নগ্না খরাস্থিতা
লম্বোষ্টী কর্ণিকাকর্ণী তৈলাভ্যস্ত শরীরিণী।
বামপদোল্লসল্লোহলতাকং ভূষণা
বর্ধনমূর্ধধ্বজা কৃষ্ণা কালরাত্রি ভয়ঙ্করী।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মা কালরাত্রি রূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ
মহাগৌরী
নবরাত্রির অষ্টম রুপ হিমায়ল কন্যা গৌরবর্ণা রুপে ধরাতলে আবির্ভূতা । দেবী মহাগৌরী শ্বেতবর্ণা। শ্বেতবস্ত্রাবৃতা। বৃষভবাহনা। মহাগৌরী চতুর্ভুজা সর্বগুণসমন্বিতা। দেবীর অলংকার শ্বেতবর্ণের-শঙ্খবলয়। কণ্ঠ ও কর্ণের ভূষণ শঙ্খনির্মিত। মস্তক রজত মুকুটে সুসজ্জিতা। দেবী শিবের তপস্যায় রৌদ্রের তাপে কৃষ্ণা বর্ণা | মহাদেব গঙ্গাজলে স্নান করান বলে, দেবী হয়ে ওঠেন গৌরবর্ণা। তাই মহাগৌরী নামে পরিচিতা। দেবী মহাগৌরী সন্তানবৎসলা। বিদ্যুদ্বর্ণা। প্রসন্ন রুপে আবির্ভূতা। নবরাত্রির অষ্টম রাতে দেবীর উপাসনায় সমস্ত পাপ মুক্ত | দেবীর এক হস্তে শোভিত বরাভয় মুদ্রায় | বাকি তিন হস্তে পদ্ম, ত্রিশূল ও ডমরু | শিবসোহাগিনী দেবী মহাগৌরী অষ্টাদশী বালিকা সাজে সজ্জিতা হয়ে নৃত্য পরিবেশন করে শিবকে প্রমোদে আচ্ছন্ন করেন। দেবী মহাগৌরী শিবের অর্ধাঙ্গিনী। দেবী মহাগৌরী স্বামী সোহাগিনী। দেবী মহাগৌরীর উপাসনায় সৌভাগ্য লাভ। সমস্ত জগতের কলুষতা পাপ থেকে নিষ্কৃতি।
শ্বেতবৃষে সমারূঢ়া শ্বেতাম্বরধরা শুচিঃ ।
মহাগৌরী শুভং দধান্মহাদেব প্রমোদদা।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মা মহাগৌরী রূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ
সিদ্ধিদাত্রী
নবদুর্গার সর্বশেষ রুপ সিদ্ধিদাত্রী। প্রাতঃসূর্যের মত রঞ্জিতা। সিদ্ধিদাত্রী দিগম্বরী পদ্মাসিনা। যোগমায়া মাহেশ্বরী সিংহবাহিনী চার হস্তে শঙ্খ,চক্র,গদা ও পদ্ম আশীর্বাদী মুদ্রায় সুশোভিতা।
স্বয়ং মহাদেব দেবী পার্বতীকে সিদ্ধিদাত্রী রূপে পুজো করেছিলেন বলেই তাঁর আশীর্বাদেই মহাদেব সর্ব সিদ্ধি লাভ করেন। ‘সিদ্ধিদাত্রী’ কখনও অষ্টাদশভুজা। ‘অপরূপ লাবণ্যময়ী চতুর্ভুজা রূপেও সমাহিতা। তিনিই শিবের আরাধ্য। দেবী দুর্গার অনুকম্পাতেই ভগবান শিবের অর্ধেক শরীর নারীরুপে পরিণত বলে দেবী সিদ্ধিদাত্রী অর্ধনারীশ্বর রূপে বিরাজিতা। দেবী সিদ্ধিদাত্রীর পূজা অর্চনায় মোক্ষের দ্বার খুলে যায় আর সমস্ত কর্মের পূর্ণতা লাভ হয়।
গন্ধর্ব যক্ষা ধৈর সুরৈরমরৈর পিসেব্য মানা
সদা ভূয়াৎ সিদ্ধিদা সিদ্ধিদায়িনী ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু মা সিদ্ধিদাত্রী রূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ
দেবী দুর্গা মহিষাসুরমর্দিনী ঘরে ঘরে দুর্গতি-নির্ণাশি জগৎজননী।
দেবী দুর্গার চরণ কমল স্পর্শে আলোকিত তমসা। অনাময় ধরণী
সনাতনী রূপে শক্তিশালিনী। রণচণ্ডী চৈতন্য শক্তির রূপান্তরকারিণী
প্রকৃতিসরুপিনী পরমেশ্বরী, করুণাময়ী, শান্তিদায়িনী, কল্যাণকারিণী।
দেবী নবদুর্গা সর্বগুণ সম্পন্না বৈচিত্র্যময় শক্তি অধর্মের বিনাশকারিণী।