আমি এমন এক বিবাহিতা নারীকে জানি
যে সুদূর একছোট্ট গাঁয়ের একপ্রান্তে স্বামীর ঘরে করতো বসবাস।
যার গত পরশু পরিচয় ছিল- সে তার পৃথিবীর অচেনা পর-পুরুষ।
সে আদর সোহাগে নিজের স্ত্রীকে ‘রমণী’ নামে ডাকার অভ্যাস।
রমণীর দু’চোখ ছিল অজস্র গল্পের আঁকাজোকা, ঘরে বাইরে লোকালয়ের গভীর
যার বেশির ভাগটা বাঘ-বাঘিনীর, হরিণ-হরিণীর, অজানা ঋষি-মনীষীর, অরণ্য-নদীর
আরো অনেক পশুপাখির গল্পের অনেক নামের মিল ছিল না কোন কেতাবি স্থিতির।
বাঘের গল্পের ভেতরে স্রোতস্বিনীর টানে বেঁধে নিতো অনায়াসে সুপ্ত সাঁকো-প্রীতির।
রমণীর বিশ্বাস
বাঘ এক রকমের মায়া। ইন্দ্রজালের অদৃশ্য কায়া।
অন্ধকার নামলে চোখের সমুখে তার নির্জীব ছায়া
প্রতীত হতে পারে। বা বিকট শরীরের শ্বাস-প্রশ্বাস
ছুঁয়ে যেতে পারে তার নির্লিপ্ত মায়ার অনন্যচ্ছাস।
রমণীর চেতনায়
স্নেহ-প্রেম-ভালোবাসা সকালের নরম আলোর ছোপ।
দুপুরের শ্রান্ত বেলার ভাতঘুম নিশ্চিন্তের সংসার-টোপ।
সাঁঝযৌবন রাত্রির নিঃশব্দ আলাপন পরশপাথর জীবন।
ফুলের সৌরভে আগুন মনের উদ্যান সুখের সম্মুখীন।
এইও এক রকম বাঘ শক্তিমান শরীরের অরণ্যে
ঋতু চক্রের পূর্ণতা নিরন্তর সুন্দর অভয় শরণ্যে।
গৃহিণী রমণী
নারীর স্পর্শ নারীর কোল যেমন শিশুর তেমন বৃদ্ধের আশ্রয় নিরাপদ।
দূরত্বের গভীরে লুকিয়ে থাকে ভালোবাসা বাঘের রোমাঞ্চকর শ্বাপদ।
বাঘের নিঃশ্বাস বেঁচে থাকে অরণ্যের শীতলতায় গাছপাতার উষ্ণতায়।
দিনের চড়া রোদ আকাশ সূর্যের শোভা। অরণ্যপ্রেম বাঘের সুন্দরতায়।
মানুষের বিষাদ পারেনি করতে অরণ্যের ভালোবাসার জ্যোৎস্নাকে বন্ধ্যা
হৃদয় ধ্যানে শুনতে পারো তার নির্লোভ নখর আওয়াজে নান্দনিক সন্ধ্যা।
বাঘ,লতায় জড়ানো অরণ্য অন্ধকারে নিশ্চুপ
জ্যোৎস্নায় ঠোঁট কাঁপে। শরীরে অদ্ভুত গন্ধরুপ।
জ্বলজ্বল চোখ। ঠোঁট নাড়ানো কথার মৃদু উচ্চারণ
যার অর্থ হয়তো কারো কাছে ভয় বিপত্তির কারণ
বা ভালোবাসার মন্ত্রমুগ্ধ অব্যর্থ জীবনের ব্যাকারণ।
বিকাশ দাস / মুম্বাই