সন্ধ্যে নামার পরে বেড়ে যায় ব্যাস্ততা;
রাতের গভীরতা বাড়ছে।
খেয়ালের ট্রাফিকে যতো দিন ফুরানো ভাবনা।
দিবসের সব ফুরিয়ে গেলে,
একটি রাত শেষ হবে।

একটু পরে গভীর নিদ্রাযাপনের পালা শুরু হবে।
ইশ!  
ফুরিয়ে যাবে- ফেসবুকিং,ইনবক্স,মুভি আর
প্রভুর নিকট আত্মসমর্পণের এক মুঠো আকুতি।
অথচ দুনিয়ার প্রতি এক সমুদ্র মোহো ভর্তি মগজ।  
স্যাটেলাইট ভর্তি ইলেট্রনিক ডিভাইস,
না চাইতেও তার সঙ্গেই বসবাস।

রাত নিয়ে গভীর আকাঙ্খা,
এই রাত ফুরলে,
কিছু বাকি থেকে যাবে ভেবে ভেবে
নানান কিছু করে বসা।

অথচ সময় আটকাতে চায়না।
লিখছি,পড়ছি,জীবনের অংক মেলাতে মেলাতে
মধ্য রাত।  

তবুও কিছু শেষ করবার প্রবল ইচ্ছে।
মৃত হলেই তো ভোরের নিস্তব্ধতা নিয়ে
ফেরা-না ফেরার উভয় সংকট।

ঝিঁঝিঁ পোকার মতো,
দিনে ঘুমোতে পারলে ভালো হতো।
স্নিগ্ধ রাতে -
কারোর ঘুম পাড়ানি ঝিমঝিম শব্দ হতে পারতাম।

হুতুম প্যাঁচার মতো এ ডাল ও ডাল করে
রাত উড়িয়ে দিতাম।
এখন কি আর কম ওড়াই ।

এই ঘুমোব বলে বলে,
ঘন্টা তিনেক অনায়েসে পার করি
দানবমুঠো রাতে।

যুগ-যুগান্তরে অসংখ্য  আজনবী-
নিজেদের চেহারায় বয়েসের ছাপ ফেলেছে,
এমন নিশুতি রাতের আহ্লাদে।  

ঘোরতর দুষ্কর্ম্মের ছায়াতল ঘেঁষে,
বেরিয়ে যাচ্ছি রোজ;
জাগ্রত রাতের নির্জনতা নিয়ে
এখনো ভোর হয় মুঠোফোনের আসক্তিতে।

ভোর হয় ;
ভুত দেখা কুকুরের ঘেঁউ ঘেঁউ শব্দ শুনে,
দূরপাল্লার অজ্ঞাত গাড়ির শো শো হাওয়া শব্দে,
টিনের চালে পাতা নিংড়ানো শিশিরের টিপটিপ শব্দে।

অথচ রাত দশটায় ঘুমোনোর কথা ছিলো।
ভোরের আলো দেখবার প্রতিশ্রুতি ছিলো-
প্রকৃতির সাথে ।
দেখা হয়না;
এক যুগ দেখা হয়না- শিশির ভেজা ঘাস,
শোনা হয়না পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ।

ঘুমোলেইতো একটি রাত শেষ,
ভাবতে ভাবতে জীবনের অনেক কিছুই-
বাদ পড়ে গেছে রোজ।

তবুও রাত জেগে জেগে
সব আকড়ে ধরার অপচেষ্টায়;
ক্যালেন্ডারের পাতা উলটে
গড় আয়ুর সংখ্যা ফুরিয়ে আসছে অনবরত।