নজরুল
বরুণ হালদার

বিংশ শতাব্দীর অশান্ত সময়ে,
ছুটে এসেছিলে প্রেম দিতে।
কলম ধরেছিলে অসহায় বঞ্চিত
নিপীড়িত মানুষের হিতে।

তুমি ইস্পাত কঠিন লৌহ মানব
আপস করনি কারো সাথে।
ভীত সন্ত্রস্ত স্বৈরাচারী ইংরেজ,
হাতকড়ি পরালো তোমার হাতে।

অন্যায় উচু-নিচু ধনী-গরীব,
অসাম্যের ঝংকারে কেঁপে উঠেছিল
তোমার হৃদয় বীনা।
তোমার অক্ষর রঙের জলছবি
প্রবন্ধ উপন্যাস নাটক,
কাব্যগ্রন্থ সর্বহারা ছায়ানট অগ্নিবীণা।

মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই,
ঈশ্বরকে খুঁজে পেয়েছো বুকে।
তোমার কলম গর্জে উঠেছিল, কুলি মজুর বারাঙ্গনার দুঃখে।

কালজয়ী গীতিকার
লিখেছ প্রেম সংগীত শ্যামা সংগীত
নিন্দা করেছে নিন্দুকে।
তোমার সুরে চিত্ত দোলে,
স্বর ব্যঞ্জনায় প্লাবিত করেছ
হৃদয় সিন্ধুকে।

জাতিতে জাতিতে হিংসা-বিদ্বেষ,
বিভেদ মারামারি নিগ্রহ হানাহানি।
লিখেছিলে এক বৃন্তে দুটি কুসুম
এই কালজয়ী বাণী।

তুমি চেয়েছিলে হিন্দু মুসলিমের
বিভেদ মুছে যাক,
গালাগালি পরিণত হোক গলাগলিতে।
হিংসার আগুন এখনো জ্বলে,
তোমার বাণী পারেনি কেউ মেনে নিতে।

পুত্রদের নাম দুই সম্প্রদায়ের,
কৃষ্ণ মোহাম্মদ অরিন্দম খালেদ
কাজী সব্যসাচী কাজী অনিরুদ্ধ।
সম্প্রীতির এমন জলন্ত বার্তায় জ্বলে উঠে,
তোমায় কাফের শব্দে করেছিল বিদ্ধ।

তোমার লেখনীতে প্রেমে ভাসলো পৃথিবী,
নিরাশ পৃথিবীতে চেয়েছিলে ভালোবাসা।
হয়ত কোনদিন আমাদের প্রবল টানে,
ফিরে আসবে এই আমার আশা।
                 ... ... ... ... ...