বেণীমাধব
বরুণ হালদার
বেণীমাধব বেনীমাধব,
কেমন আছো বলো ?
অনেক বছর বাদে গ্রামে এলাম,
সব কিছু কেমন পাল্টে গেছে আলোর দিকে চলো।
অন্ধকারে ভীষণ ভয়,
আমার আলো নিভে গেছে বহু বছর আগে।
ফাগুন এলে সেসব কথা,
এখনো মনে জাগে।
কালকে রাতে হঠাৎ করে,
মোহন বাঁশি উঠল বেজে আমার কানে কানে।
সারা রাত চোখের পাতা এক করিনি,
ভোর রাতে চুপি চুপি ট্রেন ধরলাম,
কেউ যেন না জানে।
তারপর বলো,
তুমি, তোমার পরিবারের আর সবাই,
আছে তারা ভালো ?
চুল পেকেছে ঠিকই,
এখন আর আমার গায়ের রঙ নেই আগে মত কালো।
আমাদের স্কুলটা কি সেরকমই আছে ?
কেমন আছেন দিদিমণি ?
আমার জীবন কেন এমন হলো,
নিশ্চয়ই রুষ্ট ছিল শনি !
সেই যে ব্রিজ,
বিকেল হলে লুকিয়ে দেখা,
আচ্ছা সুলেখা কোথায় থাকে ?
ও আমার মনের কথা সব জানত,
আমার স্বপ্ন হারিয়ে গেছে নষ্ট গলির বাঁকে।
তখন সেলাই করে ক টাকা পেতাম,
বাবার ওষুধ কেনায় টান।
রুমার কথায় বাঁচার স্বপ্ন ছিল, সারা রাত ঘুম হলো না,
হৃদয় ভেঙে হোল খান খান।
তুমি শহরে গিয়ে আর যোগাযোগ রাখলে না,
ষোলোর মঞ্জুরী আঠেরোয় পুড়ে ছাই।
বাবাকে বাঁচাতে গেলে সেলাইয়ের টাকায় হবে না, অনেক টাকা চাই।
অনেক ভেবে আগুন চিতায় ভাসিয়ে দিয়ে,
ভাঙ্গা মনে শহরে দিলাম পাড়ি।
পঁচিশ বছর কেটে গেল,
আর কোনদিন হয়নি ফেরা বাড়ি।
হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমি নষ্ট মেয়ে,
কষ্ট করি শীতল ঘরে থাকি।
ঘর হবে বর হবে জীবন থেকে স্বপ্নগুলো,
দিয়েছে আমায় ফাঁকি।
চাইনি আমি এমন জীবন,
কত স্বপ্ন ছিল তোমায় নিয়ে।
তুমি মেরে ফেলেছ বহুআগে,
তবু বেঁচে আছি ঐ পাড়ায় গিয়ে।
তোমার সাথে দেখা হলো
সবার খবর পেলাম ভালই হলো,
এবার আমি যাই।
খুব ঠকেছি তোমায় ভালবেসে, এখনো তোমার ভালো চাই।
তোমার ভালো চাই।
... ... ... ... ... ...