কৃষক ও মাঠ
গাজী আবদুল্লাহেল বাকী

মানব ঋতুতে ওঠে উল্লাসের উদগীরণ,
আবাদের জন্ম দেয় প্রগাঢ় কামনা,
কর্ষক লাঙ্গল দিয়ে করে কর্ষণ মাঠ,
প্রচন্ড ঘাম ও আবেগে ঝাড়ে তার শক্তি।

অন্তিমে রোপন করে বীজ মাটির উপযুক্ততায়,
এতদিন যা ঘুমিয়ে ছিল তার আদিম রক্তে,
ফলবান মাটিতে বেড়ে ওঠে উদ্ভিদ চারা,
বর্ষার জলধারা ও সূর্যের আলোর পরশে।

অদ্ভুত বন্যতার ভিতর হতে উন্নত একটি সুস্থ বৃক্ষ,
পল্লব, ফুল ও ফলের সমারোহে জীবন-কানন,
সংস্কৃতি ও সভ্যতা, জ্ঞান ও ঐতিহ্য
উন্মেষ ও বিলীন হয় আশা ও নিরাশার মাঝে।

বাস্তবের মূল কারণ এই বিশাল বৃক্ষটি
যা একমাত্র আনন্দ বেদনার ফসল,
সেই একই বীজে কেমন সুপ্ত সৃষ্টি ও ধ্বংস,
একটি নিরুত্তর ধাঁধা রুদ্ধ যার চির কপাট।

কর্ষক ও মাঠের মাঝে ক্ষণিক মিলন ঘটায় সময়,
দ্বৈত প্রবৃত্তির বসে যেথা চলে বিশ্ব অবিরত,
প্রজ্ঞা পরাজিত পারে না বাঁচাতে ওই বীজ,
তবুও চাষ করে যায় কর্ষক শূন্যে হারিয়ে যেতে।

(কবিতায় উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের জন্য আমেরিকার ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরী অব পোয়েটি  কর্তৃক ‘এডিটরস চয়েস এওয়ার্ড পুরস্কার প্রদান ও ‘স্টার ডাস্ট ইন দি মর্নিং’ সংকলনে প্রকাশিত।)