স্বর্গীয় পানীয়
গাজী আবদুল্লাহেল বাকী
এক ঘেয়েমি পাতায় ঢাকা - স্বর্গীয় ঔষধির কানন,
মন হৃদয় ও স্নায়ুকে করে নিপীড়ন,
এছাড়া কেমনে নিসর্গের এই উপহার
শান্ত করে সভ্য মানবজাতির ইন্দ্রিয়কুল।
করে গৌরবময় পর্ব উৎসব অতি মনোহররূপে
যা পারে না একটি মনোরম পুষ্পকুঞ্জও।
স্বর্গীয় এই পানীয় যে করে পান
স্মৃতির অতলে হারায় সে সকল দুঃখ।
নিহিত চা-পানে শিল্পকলা শিষ্ট আচরণ,
তরল কায়ায় এর দেখতে সমান, যদি তা হোক না
কালো বা সবুজ, ভারি বা পাতলা, ধুলি ধূসর বা ঘুণিত
যেখানে স্বাদ সতেজ বা কোমল, মিষ্ট বা সুগন্ধিপূর্ণ।
চা পথিকের প্রাণশক্তি অলসের আকাঙ্খ।
ভবঘুরের সমাজ ও চেতনার ক্ষণিক বিস্মৃতি,
কর্মের উদ্দীপনা, অনেকের প্রেম ও প্রশান্তি,
কবির কল্পনার রাজ্যে নিরন্তর গমন,
রাজনীতিকের প্রয়োজন যখন আক্রান্ত মন
হাজার সিদ্ধান্ত ও দ্বিধার মাঝে দোদুল্যমান।
এক কাপ চা হতে নির্গত সময় ও শান্তির সংকেত।
সমবেত চায়ের চমক জাগিয়ে তোলে চা-বাদ,
আনে ঐক্য স্মরণীয় করে আভিজাত্যের সুমিষ্ট সৌরভ।
কি এক নান্দনীয় দৃশ্য ফুটে ওঠে সেখানে
যখন উন্মোচিত পেয়ালা রং ও স্বাদের মোহনীয় কান্তি!
সুগন্ধি সময় তখন প্রণোদিত করে মানব মেধা।
এক কাপ চা নিঃসঙ্গ আত্মার স্বর্গীয় খোরাক,
এ সৌন্দর্যের অর্চনায় দিন যার অতিবাহিত।
অতি প্রাচীন সম্মানের অধিকারী চা,
করে সুনিশ্চিত সকল আনুষ্ঠানিক আচার-আদর্শ,
ফলতঃ চা বিরতি আবশ্যক যেখানে শয্যা-চা আনন্দদায়ক,
সুস্বাদু এক কাপ চায়ের চুমুকে আলোচিত সারাবিশ্ব।
অবিনশ্বর তা সৃষ্টি করে মানবতার চেতনা
সভ্যতার অভিজ্ঞ তথা বন্ধুর পথ ধরে
যেখানে চা চর্চা বহন করে মানব পরিচয়,
এর জনপ্রিয়তা করতে ম্লান অক্ষম অন্য পানীয়,
সত্যিই চায়ের জন্য জন্মেছে মানুষ, মানুষের জন্য চায়ে।
(আমেরিকার বিখ্যাত English Teaching Forum ম্যাগাজিনে Tea Survey, April 2002 উপলক্ষ্যে প্রকাশিত।)