দাঁত
গাজী আবদুল্লাহেল বাকী

দাঁত আমাদের অক্ষয় অভিধান, অমূল্য দ্বীপ,
মানুষ নামে পরিচিত হওয়ার প্রথম চিহ্ন,
দাঁত ওঠার সাথে সাথে অনুভূতি, আবেগ
ও বুদ্ধির রাজ্যে ঘটে ভীষণ তোলপাড়,
দাঁত দেহের পরম মসৃণ সভ্যতার বাহক।
           শিশুর নিষ্পাপ হাসিতে ঝুলে থাকে বিভা,
           কৈশোরে দাঁতের হাসিতে ঝরে অনাড়ম্বর অভিজ্ঞতা,
           আক্কেলে ভরে ওঠে সকল বন্দর দাঁতেই বোঝায়,
           যৌবনের দাঁত জাহাজ ভিড়ায় সেখানে,
           দ্বদ্বর মুখোমূখি হয়ে ওঠে দাঁতের কাহিনী।
হাসিতে শোভা ঝরে, ঝরে হাসিতে উল্লাস,
অতি কাছাকাছি পাখি যেভাবে নীড়ে ঘুমায়,
লাস্যময় ভালোবাসা পৃথিবীকে বাঁধতে পারে
অতি কোমলতার পরশে, একজন সুন্দরীর
গর্বহীন দাঁতের চমকে হেসে ওঠে সারা বিশ্ব
দাঁতের ঔজ্জ্বল্যে ম্লান হয়ে আসে সকল সম্পদ।  

              সকল অজ্ঞনতার মাঝে দাঁতের দৈহিক বেদনা
              বাঁচিয়ে রাখে সূর্যের পানে তুলে ধরা দুটি আঁখি,
              মানুষ ও প্রাণীর, মাঠে ও রেস্তোরায়,
              ভবনে ও কাননে, নিসর্গ ও দরিয়ায়
              বলবান দাঁত শক্তি ও আনন্দ জোগায় ক্লান্তিহীনভাবে,
               কাব্য শিল্পের চেয়ে দাঁত শিল্প আদৌ অনুন্নত নয়।  
বর্ষীয়ান দাঁত এভাবে নিমগ্ন থাকে
কালের সাক্ষী হয়ে একটি ক্ষুদ্র অথবা মহৎ জীবনের।
মানুষের মৃত্যুর আগে স্মৃতির বেদনা ভুলতে প্রায়ই
দাঁতের মৃত্যু ঘটে যায়, দাঁতই একটি জীবনকে
পুনরায় শিশুর চেতনা দিতে সক্ষম।
                পৃথিবীর বুকে এক এক সভ্যতা আসে, চলে যায়,
                সভ্য দাঁত তার অস্তিত্ব দিয়ে সাজায়ে রাখে মানব কুঞ্জ,
                এমন মূল্যবান বিমলগিরি ঐশ্বর্য্য কল্যানেই  
                কাজে লাগে, দর্শন বিজ্ঞান যেখানে সত্যই  ম্লান,
                এর চেয়ে নিখুঁত সভ্যতা পৃথিবীতে আর কোথায়?