বাতাসের গান
গাজী আবদুল্লাহেল বাকী
আকার ছাড়া জন্ম আমার
ঠিক-ঠিকানা কোথাও নাই,
সামনে বাধা হঠাৎ এলে
একই সুরে গানটি গাই।
মন্দ পরশ বুলাই আমি
আমেজ দিয়ে জুড়াই প্রাণ,
বিশাল দেহ কেউ দেখেনা
হালকা ছোঁয়া হিমেল দান।
পথের চিহ্ন ভিন্ন উধাও
হই যে মৃদু উদাস হলে,
তরল নই কঠিন নই
নম্র জীবন এমনি চলে।
থমকে থেকে আবার চলি
নিসীম শূন্য বিল পাহাড়,
একলা মনে সাঁসাঁ ভেলায়
সাত দরিয়া হই যে পার।
নিশান শূন্যে উড়াই আমি
বাজাই বীণা মিল মধুর,
আমার ছাড়া দিন চলেনা
পাতার মাঝে ফুটাই সুর।
নেচে ছড়াই নবীন রেণু
জাগাই কুড়ি শিশির ভেজা,
গন্ধ বিলাই ফুলটি হতে
কৃষ্ণকলির খোঁপায় গোঁজা।
আমার পেয়ে ঘামের দেহ
নিবিড় পুরে ঘুমায় বেশ,
দেখতে কতো অধীর লাগে
ওড়ে যখন উদাম কেশ।
মেঘ-মালাকে তাড়াই দুরে
জল ঝরিয়ে ফুল-ফুটাই,
ব্যস্ত-জীবন এমনি চলে
নিরব মনে উথাল ধাই।
বহন করি ধ্বনির বোঝা
ঝেটিয়ে নেই ধুল আকর,
আমার শিষে কণ্ঠ ঝরায়
হর্ষ পুলক মন-চকোর।
নদীর বুকে ঝাপটা মারি
কাঁপতে থাকে নায়ের পাল,
জল-তরঙ্গে ঝিলিক জাগে
মীনের ঝাঁক বাড়ায় গাল।
বেড় পরিধি দূর সীমানা
কুল-কিনারা নেইকো যার,
আমার ঘরে রাখতে পারে
শক্তি এমন সাহস কার।
মাঠের মাঝে চপল তালে,
মুক্ত হাওয়া বয় যখন,
কেনা আমার আদর মাখে
আলতো প্রেমে হয় মগন।
খুলতে কেহ নেইকো পারে
একটু ছোঁয়া সুখ আরাম,
গরম জালা জুড়াই আমি
চলছি উড়ে নেই বিরাম।