জননী আমার
গাজী আবদুল্লাহেল বাকী

একটি অফুরন্ত উঠান, অবাধ আকাশ,
আলো আঁধারের পৃথিবীর
অনেক দরজার মাঝে একটি দরজা
যার সামনে দাঁড়াতেন আমার মা,
আমার রাজ্য সত্তার অধিকারিনী যিনি।

যার সতর্ক ভুরুগুলো ভবিষ্যতের
নির্দেশ দিতো আমায়, ঝড়ের প্রচণ্ডতায়
যখন দৃষ্টিতে ডুবে যেতো দৃশ্যমালা,
চারিদিকে কম্পন আর বিহ্বলতায় ভরে যেতো,
আশ্রয়ের আঁচলে ঢেকে রাখতেন তিনি আমার মা।

গাছপালা ঘেরা শৈশবের একটি বাড়ি,  
যে বাড়ির সৌন্দর্য্য ছিলেন সেই শান্তির প্রতীক,
যে বাড়ির প্রাণ উছলিয়ে উঠতো তার প্রাণে,
ভরপুর ছিলো ঐশী মমতায়,
মা মানেই ছিলো একটি পরিবারের উদার পরিচয়।

মুক্তিযুদ্ধের সেই অশান্ত দিনগুলোতে যিনি
দু’হাত ভরে চাইতেন স্বাধীনতা সৃষ্টিকর্তার কাছে
আর যেখানে যেতেন লুকিয়ে রাখতেন সযতনে
আমার কবিতার খাতায়যে কবিতাবলীর শব্দে লাইনে
ছিলো শত্রুর প্রতি হুঙ্কার আর এক নতুন পৃথিবীর দাবী।

আজ প্রতিটি নিঃশ্‌বাসে, প্রতিটি পদক্ষেপে
মনে হয় এক একটি যুগ পার হয়ে যাচ্ছে,
এখন শহুরে বাড়িটি কতো রঙে রত্‌নে ভরপুর অন্য রকম,
কিন্তু শাশ^ত রত্নটি বিরামহীন খেলতে চলতে
চির বিদায় নিয়ে চলে গেছেন এই খেলাঘর হতে।