৮১
অগস্তি বোস
অগস্তি বোস তো মস্ত মানুষ, দুর্দান্ত অবস্থা ;
দস্তুরমতো জানেন তিনি কোনখানে কী সস্তা ।
দরাদরিতে ডক্টরেট, সে কী দারুণ অধ্যবসায় ;
ফড়েকে বলেন, বাপু, তুমি কারবারী নও, কসাই ।
গামছা কিনতে গেলেন তিনি হাতিবাগান বাজার ...
ফুটপাথেই দোকান-পসরা, হকার হাজার হাজার ।
পছন্দ হল বাঁকড়ো গামছা, প্রশ্ন করেন দাম ;
দাম শুনে প্রায় ভুলে বসলেন, স্ব-নাম-পিতৃনাম ।
ডবল বহর গামছা কিনা, তিনশ’ পঁচাশি টাকা !
অগস্তিবাবু ভাবতে থাকেন কতটা যায় হাঁকা ।
দরাদরি লড়ালড়ি সে প্রায় ঘণ্টা দু’ তিন-চার
একশ’ টাকায় হকারবাবুকে মানতে হল হার ।
কী দারুণ দাঁউ মারা গেছে ! বেচারী বেশ আনাড়ী ;
যুদ্ধজয়ী অগস্তি ফেরেন বুক ফুলিয়ে বাড়ি ।
নকুড়ন্দ্র বাঁকুড়ার লোক, তাঁর পাড়াতেই থাকে
ঠিক কতখানি লাভ হয়েছে প্রশ্ন করেন তাকে
নকুড় বলে,”শুনুন বাবু, বিশ কী পঁচিশ টাকায়
বাঁকুড়া-তাঁতের আসলি গামছা এখনো পাওয়া যায় ।“
৮২
ফুল ও মূল
আকাশে কী সুন্দর আলো ! দেখে বলে ফুল,
"চিরটা কাল অন্ধকারে থেকে গেলি মূল ।
রসের সন্ধানে ঘুরে মরলি চিরদিন ;
দেখলি না এ জগৎ কেমন সহাস্য-রঙিন ।"
হেসে মূল বলে, “শোনো, এ ভাবনা অলীক
হাতে যার রস-ভাণ্ডার, সেই তো রসিক ।
তোমার আলোক-স্নান, সে আমারই গৌরব
না থাকলে আমি, কী পেতে ওই রূপ ও সৌরভ ।"