ধর থেকে মাথাটা ছিটকে পড়ে
তিন হাত দূরে। ভুট্টাক্ষেতে।
বুলেটে ঝাঝরা দেহ।
প্রাণটা কখন উবে গেছে আল্লার কাছে।
তবুও, এই আব্বা ঘুম থেকে উঠে
বাড়ি নিয়ে যাবে তাকে সন্ধ্যার আগে,
আর বাড়ি ফিরে বানিয়ে দেবে বন্দুক–
ভেবেছিল বছর চারের শিশু।
এই বন্দুক দেখেছিল সে চাচার কাছে।
আইএসআইএস-এর কাছে আত্মসমর্পণ নয়
ছিল গ্যান্ড আয়াতোল্লা আলি সিসতানির ডাক।
শিয়া ধর্মগুরুকে মেনে চাচা অস্ত্র নিয়েছিল হাতে
এই অস্ত্রেরই আবদার ছিল তার।
সারাদিন আব্বার পিছু পিছু ঘুরে
এসেছিল সেও ভুট্টার ক্ষেতে।
কাজ কখন শেষ হবে? ভেবে ভেবে
ঘুমিয়ে পড়েছিল গাছের ছায়ায়।
হঠাত্ এল ওরা...মানুষ মারার কল।
পালাবে কোথায়? নিস্তার নেই।
আব্বাও যে শিয়া সম্প্রদায়।
ঘুম ভেঙে ছেলে দেখে
আব্বা রয়েছে ঘুমিয়ে।
শূন্য মাঠ। নিঃশব্দ প্রান্তর।
অপেক্ষায় প্রহর কাটে।
ভুখা পেটে কেঁদে চলে সে।
ঘুম ভাঙে না তবুও আব্বার।
কানে আসে আজানের সুর।
ছোট পায়ে এগিয়ে চলে ছেল...
আব্বাকে ফেলে।
বহুদূরে -আবছা আলো অন্ধকারে
নামাজ পড়ছে যেন কেউ। এগিয়ে যায়।
শিশু জানে না ও আইএসআইএস।
ওই তো পাশে রাখা রাইফেল।
চুপি চুপি হাতে তুলে নেয় সে।
এই বন্দুক চেয়েছিল বুঝি?
সারাদিন প্রহর কাটিয়ে?
কোনো দিকে না তাকিয়ে
এগিয়ে চলে ছেলে।
বন্দুক কাঁধে। কোথা যাবে জানা নেই।
দূরে দেখা যায় শহর।
নিরাপদে বাড়ি পেঁৗছাবে কি
বাগদাদের বাবর?
(কোনো ধর্মসম্প্রদায়ের মানুষকে সামান্যতম আঘাত করার ইচ্ছা নিয়ে আমি এই লেখা লিখিনি। তবুও কেউ যদি আমার কবিতার কোনো ভাষায় আঘাত পেয়ে থাকেন আমি ক্ষমাপ্রার্থী। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকের বুকে একটা শিশুর অসহায়তাকেই আমি তুলে ধরতে চেয়েছি। কবিতা পড়ার শেষে যদি একটি মন্তব্য ফেলে রেখে যান ভাললাগা বা খারাপলাগা জানিয়ে যান আমি ধন্য হব।)