মেয়ে তুমি শুইয়ো না অতল জলে,
ডুবে যাবে! ডুবে যাবে!
এইতো সেদিন পূর্ণদশী জোছনাকে নিয়ে বুকে,
ডুবে গেলো ওইখানে, মাহুতের সাঁকোর নীচে-
অষ্টাদশী মেয়ে উথাল পাতাল পাঁকে!
তার মতো ডুবোনা অকালে,
তুমি ডুবোনা আর রাণীর কুঠুরির ঘাটে,
শাপলার ডগার আগায় নাচছে বাসুকির প্রেম!
কিছুটা শরীরে তার অশরীরি ছায়া,
বৃষ্টির রেণুর মতো অবিরত মায়া,
পুড়বে! পোড়াবে সব!
মেয়ে তুমি এ ভ্রষ্ট লগ্নে ভেসোনা জলেতে আর,
এই শহরে হেইমডালের শিঙার হুংকার,
প্রতারিত ভবিষ্যৎ নিয়ে ডুবে আছে পাশাপাশি,
অপেক্ষা সময়ের; ফুটবে আগুনে সব,
নদীর মায়াবী স্রোত নেই নিরাপদ!
নীলাভ ওড়নাকে পাখনা ভাবার কি দরকার?
মেয়ে তুমি ডুবোনা আর,
লুকানো গুপ্তধনের মতো, গুপ্ত-মৌর্যদের লুপ্ত-
মূদ্রার মতো উঠে এলে অকস্মাৎ,
ভেসে এলে টন টন দুঃখরাশি,
তুমিও ভেসে যাবে! ভেসে যাবে!
মেয়ে জলের নীলচে চোখে ভেসোনা আর,
তুমি আকাশের সোনারঙ্গা চত্বরে উদাস বরণ পাখি,
বিলাসী জলে ডোবার নেই কোন দরকার!
তুমিতো যাচ্ছ ভেসে কচুরিপানার মতো,
কার ঘাটে? কোন ঘাটে?
দুইপারে কালো মাটি; পিচ্ছিল জোঁকের আস্তানা!
রক্ত শুষে নেবে; শালুক ফলের খোসায়-
মোড়া শাঁসে স্বাদ নেই কোন!
মেয়ে তুমি ক্ষান্ত দাও দুরন্ত সাঁতারে,
কাঙ্ক্ষিত যুবকেরা অনুপস্থিত লম্বিত দুই তীরে,
স্বয়ংবরে কুমার পৌছায়নি এখনো!
যুবকেরা চাঁদ ভেজে খায় রাতের কড়াইয়ে,
তারা সাঁতার বোঝেনা; রুপালী শরীরের কসরত-
দেখে ক্ষুধার্ত হয়ে উন্মাদ হলো যারা,
দুই তীরে তাদের আবদ্ধ রাখে পাগলাগারদ!
মেয়ে তুমি যাবে কোন ঘাটে? কার ঘাটে?
তুমি আর জলে ভেসোনা!
স্রোতের তলায় ভাসে আজকাল মাংসাশী উদ্ভিদ,
প্রণয়ের কলস বৃক্ষ গিলে খায় সব!
তোমার ছড়ানো হাত বাতাসের মতো,
পুন্ড্র বৈশালী হয়ে উড়লো কোথায়?
তুমি তো জলেতে আছ! এখানে আকাশ নেই,
মেয়ে তুমি আর জলে উড়োনা,
ডুবে যাবে! ডুবে যাবে!
জলের চোখের নীচে কালির মতো বেঁধেছে বাসা,
সুগভীর পাঁক!
ভেসে যাবে! ভেসে যাবে!