বাজে নিহিত গর্জন; মেঘহীনা বাতাস যেমন,
অকারণে মরে পড়ে থাকে মাকড়সার ফাঁদে!
নীচে ঊষ্ণ রাজপথ ডুকরে ডুকরে কাঁদে,
চিরঞ্জীব বনস্পতি ছুড়ে ফেলে অমরত্বের থলি,
মধ্যরাতে ছেড়ে গিয়েছে আমাদের প্রিয় গলি!
এখন অনির্বাণ শিখা তার দিচ্ছে অবশিষ্ট দহন,
তুমি নাকি ছেড়ে যাবে এই প্রাক্তন শহর!
একটা অদৃশ্য নদী এসেছিল ময়ূরাক্ষী চোখে,
বলেছে সে এইসব গোপন খবর!
পায়ের পাতায় মেখেছি তারই দেয়া জলকণা,
ঢলে পড়া ফার্ণের ডোরাকাটা পাতার মতোন!
পুড়বোনা আর যতই জ্বালাও দেশলাইয়ে ঝড়,
আগুনে জ্বলেনা কোন শূন্য বিবর!
একটা অশান্ত সমুদ্র তুমি দিয়েছিলে উপহার,
গাঁড় নীলে ভরা মোড়কের ভিতরে,
বিকালের স্নিগ্ধতার কাছাকাছি খুব শান্ত দুপুরে।
শুষে নিয়ে সবটুকু স্রোত নিলয়ে অলিন্দে,
এতোকাল ছিলাম তো বেশ! অভাব পাইনি টের-
কোন বিশল্যকরণী ওষুধের!
এখন ছড়ানো কংকাল, স্তব্ধতায় শামুক ঝিনুক,
কোথায় রাখব বলো এইসব প্রত্নতত্ত্বের ভার?
শহরে এতো বড় মিউজিয়ামের প্রচন্ড অভাব!
‘তুমি চলে যাবে’- আকাশে বাতাসে ভাসে-
শুধু একটি খবর!
মনে পড়ে সেইসব জ্যোৎস্নায় আক্রান্ত রাত,
তিস্তার বিস্মৃত স্রোতে যেন ভেসে যাওয়া বালিহাঁস,
পৌরাণিক নৈশভোজে টুপটাপ পেড়েছি কতো,
নক্ষত্র ও জোনাকের সালাদ!
এখনো কি সেই প্রভা ছুঁয়ে আছে শরীরে তোমার,
মহামূল্য হার্মিস পারফিউমের মতো?
আমিতো প্রায়ই মিশে যাই ধোঁয়া হয়ে স্বপ্ন ও বাস্তবে,
এখনো কিছুটা শরীর জলে কিছুটা হাওয়ায় ভাসে,
ঘনীভূত হওয়া হলোনা কঠিনে!
তুমি কি টের পাও আক্রান্ত নীলিমায় কতো শোক-
ঢেউ হয়ে ভাসে! নেই মেঘদূত আকাশে!
শুধু রাস্তায়, টাওয়ারে, সুউচ্চ ভবনে টাঙ্গানো খবর,
তুমি নাকি খুব তাড়াতাড়ি ছেড়ে যাবে এই শহর!
অপেক্ষায় আছি শেষ স্টেশনে বিলুপ্ত প্রাণীদের সাথে,
জানি পার হবে ট্রেন কোন একদিন,
কোন এক রাতে!
দেখা হবে পুনরায় জলস্নাত পূর্ণিমায়,
তুমি চোখ রেখো দ্রুতগামী আলোর মতো জানালায়!