এইমাত্র লোনা সমুদ্র থেকে ডুব দিয়ে উঠলাম,
এইমাত্র ভেসে এলাম, বেনামী প্রাণীর মতো,
জলোচ্ছাসে;
শরীরে লবণের মাখামাখি দেখে আছড়ে পড়ছে দ্রবীভূত বাতাস,
এখানে গভীর রাত!
কতোকাল ছিলাম প্রবালে শুয়ে কে জানে,
কয়েকটা টুকরো স্বপ্নের মতো ফিরে এলো ঘরে প্রবাল সোহাগী রাত,
কি যেন উচ্চস্বরে দিচ্ছে ডাক; শ্মশানের মতো নির্জনতা
অপাংক্তেয় হয়ে বসে আছে একা,
মহাবিশ্ব নিঃসংগ এখন; আমাদের মতো খুব একা!
শুধু শুন্য আর শূন্য মিলে নেই কোন যোগফল,
একটা ধাঁধাঁও আর মেটানো হবেনা;
পোষাচ্ছেনা পেস্তার খোসার মতো শক্ত ধকল!
শূন্যে শূন্যে কোন হয়না যোগফল; তুমি আমি দুজনেই
ছিলাম নিরর্থক!
কাঁপছে, ফুঁটছে ঈশ্বরের সাধের বাগানের একুয়ারিয়াম,
দিয়েছি যখন লাফ, খাবি খেতে হতে হবে,
নিহত অক্সিজেনের শবের ভারে নুয়ে আছে বাতাস!
আমিতো শ্বাপদ নই, তবে কেন অন্ধ হয়ে আছে গলিপথ?
বাংকারে লুকালো আজন্মের ব্যর্থ শপথ,
দূর্বাঘাস আর জংলা কলমির টুকরো উঠান
উন্মাদের মতো দিচ্ছে পিছুটান!
দৌড়াতে দৌড়াতে অশ্বমেধের ঘোড়া হয়ে লাফ দিব-
জ্বলন্ত অংগারে! এখন রেশমি লেজে শুধু দাবানল আসক্ত ধোঁয়া ঘোরাফেরা করে!

কতোকাল ছিলাম মহীসোপানের সমাধিতে শুয়ে,
কে জানে! হয়তোবা বুকে মিশে আছে তিমিদের নিঃশ্বাস!
এখানে গভীর রাত;
শালবন আর গীর্জাটা পাশাপাশি দাড়িয়ে ভুতের মতো করছে ফোঁসফাঁস!
আমিতো তাদেরো কেউ নই,
তোমাদেরও আত্মীয় নই! এই শহর এক অনাকাঙ্ক্ষিত বনবাস!
বহুকাল সমুদ্রের নোনা জলে ডুবে থেকে উঠে এসে দেখি,
দানবের মনচুরি করেছে মানুষ!
কয়েক দশক আগে নিঃস্ব হয়েছে হিরোশিমা নাগাসাকি,
কতোকাল জমাট বেঁধে ছিলাম নুনে-
বরফ সাগরে; পৌছায়নি চোখে নিউইয়র্ক টাইমসের খবর,
এখনো এখানে রাত,
প্রণালী পেরোনো দ্বীপে নাড়াচ্ছে আংগুল কয়েকটি ক্রুশবিদ্ধ হাত!
রক্তের নোনা স্বাদ কড়া কাজুবাদামের মতো হাইড্রোজেন গ্যাস হয়ে ভাসছে,
ভাসছে;
হাঙ্গর কি জানেনা রক্ত ও নোনাজল মুখে নিলে লাগে একই স্বাদ!
তবু কেন পিপাসার্ত সে?
আমার শরীরের ঘ্রাণ শ্বাপদের মতো নয়,
পালাচ্ছে হরিণী, পালাচ্ছে ধবল পাখি, পালাচ্ছে সুজাতা,
আমিতো আর মানুষ নেই এখন মধ্যরাতে!
নুনের আস্তরে জমে হচ্ছি ক্রমশ মূর্তিমান ভয়,
এ এক বিচিত্র অভ্যুদয়!