(১)
কখনো আগুনে ফার্নের পাতা পুড়ায় বিশুদ্ধ জল,
তুমি কখনো দেখোনি কি তা?
মৃত ছাদে পায়চারি! পাশাপাশি হাটে কেউ,
এমন দুঃসময়ে ডুবেছে আকাশ! অপেক্ষায় প্রাক্তন নভোচারী!
জলেতে কুয়াশা জ্বলে! আগুনে পালক,
দ্রিম দ্রিম শব্দ শুনে মাঝরাতে ঘুমে হেটে হারালো যে যুবক,
খান্ডবদাহনের কালে তার কি মানায় বলো
গৃহের উষ্ণতার শখ?
তবুও পাখিরা হাটে, রোদে পুড়ে খাকি হয় ঘরদোর
অস্তগামী বিকালে অবনত জলছায়ায় চোখ,
সেখানে আমার চোখ দিনের শেষ মাছ! কন্ঠে রূপালী আওয়াজ
সেখানে তোমার চোখ ভাসমান তরংগের মতো,
খায় ঘুরপাক! অনিঃশেষ সৌর আবর্তনের সাথে দেয় ডিগবাজি!
সেখানে তুমিও আছ! আছে পুড়ে যাওয়া জলের নিজস্ব বোধ!
মেলেনা মেলেনা তারা! সবকিছু কুয়াশার ব্যর্থ প্রবোধ!
(২)
ক্রমশ যাচ্ছি ডুবে অস্বচ্ছ কুয়াশার ভিতর,
এখানে শব্দ ইন্দ্রের দামামায়
পর্যায় সরণির মতো ধাপে ধাপে উঠে
বিনম্র নম্রতায় নেমে যায়
বিষাক্ত আইভি লতায়
আমার শিরারা স্বেচ্ছায় নিয়ে নিলো বিষ,
এখানে শব্দ নেই! এখানে অর্থ নেই কোন তার!
বারবার বিষণ্ণ বেতার সুরেলা ধ্রুপদী গেয়ে ডাকে
আয় ডুবে যাই! ডুবে যাই!
দাহ্য তরলের নিম্নগামী মৃত্যুশিখার ভিতর!
(৪)
উছলে উঠছে প্রলয় প্লাবন, কর্কশ হৃদয়ের দেয়াল,
স্পন্দিত রাজপথের মতো হৃদস্পন্দনের উত্থান পতন!
শান্তিবর্ষী দেবতারা নিদ্রায় কাতর এখন,
খোলা সেডিলের পাতা তাদের বারান্দায়,
গুটি গুটি পায়ে হাটে!
কে এই অর্বাচীন? পাড়ালো তাদের ঘুম,
বিকালের সূর্যের রক্তের সাথে স্তাবক প্রলয়ের ধুম,
উৎসহীন শব্দের বেজোড় গর্জন!
জিরাফ- জেব্রা- জলহস্তির সাথে একসাথে ভেসে ভেসে,
দিন শেষে,
না এলো স্বর্গ হাতে! না এলো পৃথিবী!
তবু পায়ের শব্দ ঠিক ইস্পাতের খুরের মতোন,
লাফায় লাফায় তারা! ইলেকট্রনের মতো বেপরোয়া,
তাই বলে তো ঘোড়া সাজা মানায়না এখন!
(৪)
ধরো একটি পাহাড় পাখি হয়ে গেলো,
একটি মেঘ হয়ে গেলো দ্বীপ!
পায়ের পাতায় ছাপ! অস্তিত্বে কড়া নাড়ে গোল্ডফিস!
এখন পাখির চোখে ভাসমান উপত্যকা,
একটি বাড়ানো হাত প্রায় ছুয়ে দিয়ে,
উল্কাপিন্ডের মতো বাতাসে ঘষেই মুখ,
হাওয়া হয়ে গেলো
কয়েক শতক দূর! মেঘের দ্বীপ কিভাবে খুজবো বলো?
সিন্দাবাদের তরী গ্রাস করে বসে আছে সিন্ধুঘোটক,
একটি পাহাড় আজ পাখিতে পালক,
অম্লান জারে খাবি খায় যাবজ্জীবনের হুকুমনামা,
একটি গোল্ডফিস হয়েছে আটক!
(৫)
বিরহী কুয়াশায় তার চোখ ছলছল,
ময়ূর পালের মতো বক্র আকাশ! ক্লান্ত নিঃশ্বাস!
সবকিছু মিলেমিশে একরাশ ভালোবাসা,
প্রত্যহ পুড়ে যায় পৌষের দিনের শেষে!
তবুও মনের কোণে তুষারের নির্লিপ্ত পেংগুয়িন,
ঠোঁট নাড়ে, কথা বলে,
একা একা! মৃত চড়ুইভাতির মতো ক্লান্ত চাহুনি,
এখনো দিনের শেষে!
মায়ান দেবতার ঘরে প্রস্তরের আগুন,
লেগে থাকা হাসি ছুয়ে দিলে মরে যাই মরমে মরমে,
ফিরে এসো পৌষের পেংগুয়িন ঘুনে কাটা ঘরে!