জলাভূমি থেকে হাওয়া আসে! আসে হাঙ্গরের নিঃশ্বাস!
সলিলে সমাহিত পানকৌড়ির ডাক,
না শোনার ভান করে কেটেছে বছর মাস!
সংক্রান্তির দিনে পুড়িয়ে ফেলেছিলে একটা আস্ত নীহারিকা;
বিঘত সাইজের বোয়াল মাছের মতো! চেঁছে তোলা আইশে-
শুধু আলো আর আলো! প্রমত্ত ইথারের ঝড়!
জলসার রাগিণীতে নাগিনীর মতো নারী নেচে হয়েছে বিলীন,
ঢুলুঢুলু চোখে আসক্ত সম্রাট তার পায়নি খবর!
মঞ্চে কালের প্রবঞ্চকের আদিম উল্লাসে এখন পাই টের,
আপেক্ষিকতার সূত্র মেনেই হয়ে গেছে শেষ সমস্ত হিসাব-
আমাদের নির্ধারিত সময়ের! ঘন্টার মতো নিনাদে আকাশ!
জলাভূমি থেকে পরিত্যক্ত নবজাতকের মুমূর্ষ কান্নার মতো-
ভেসে আসে পানকৌড়ির ডাক!
ভবিতব্য নিশ্চিত! পিছল অরণ্যময় ক্যাকটাসে মুখ বুজে,
তোমার অস্থি খুঁজি! বস্তুবাদী বাতাস দেয়না কোনই আশ্বাস,
তবু পৃথিবীর সমস্ত প্রেমিকের মতো ভাবি-
মননে রাখব জমা অলৌকিক বিশ্বাস! একদিন নীহারিকা পোড়া-
ছাই থেকে হুট করে এসে যাবে তুমি!
আনন্দে কেঁদে দিবে!
উপশহরের উপকূল ফিরে পাবে বনভূমি!
মহাকাব্যের রমণীর মতো আজন্ম কাঙ্ক্ষিত তবু তীব্র অবাস্তব-
তুমি মৃত সাগরের হা-হুতাশ; মরা কোটালের রাতে-
শংখচিলের আর্তচিৎকার; যুদ্ধগ্রস্ত সীমানার পিলারে-
ঠেস দিয়ে একা, ভাবি থাক না বেঁচে কিছু অলৌকিক স্তব্ধতা!
ডাকে সমাহিত পানকৌড়ি আধা ডোবা গলুইয়ে একা একা!

কুয়াশার ওইপারে রক্তের কণিকায় জমা হৈমযুগের শীতলতা,
তোমার চোখের মণি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার মতো আজ স্থির!
গ্যাসের চুলার উত্তাপে গলেনা কিছু অদ্ভুত বরফ,
সেইসব পঞ্চভুজাকার স্ফটিক নিয়ে নাড়াচারা করো বুঝি?
আধা ডোবা নৌকায় সমাহিত পানকৌড়ি বলেছিল ঠিক-
সবাইতো ঝরে যায়, বেঁচে থেকে কতো পাতা মরে যায়,
তফাৎ করা প্রচন্ড কঠিন! তবুও এখনো তোমাকেই তো খুঁজি!
নারী প্রথম দর্শনে ছিলে রেমব্রান্টের গড়া অনাবিল হাসি,
এখন মধ্যরাতে কেন কাঁদ?
ডাইনিঙে, সোফায়, বাহারী গহনায়, মসলিন শাড়ির-
পরতে পরতে ন্যাপথালিনের মতো দুঃখের ঝাঁঝালো গন্ধ!
পালাতে পারোনা আর! এয়ারপোর্টের সবগুলো দরোজা বন্ধ!
কিভাবে পালাবে পাখি? হারানো পালকে ভ্রষ্টলগ্নে লাগিয়েছ-
নকল পশম! পালকগুলো ডুবে গিয়ে ভাসে পানকৌড়ির সাথে,
সমাহিত অতলে;
বিস্তীর্ণ জোছনার সমাধিক্ষেত্রে শীতের বিকালে,
আমোদের আগুনের সাথে জ্বলে, সেইসব হতভাগ্য পশম!
তুমি কি এখন উষ্ণতা দিতে গিয়ে নিজে পুড়ে যাও?    
পঞ্চদশীর রাতে কারুপল্লীর আদিম কাদায় প্রতিদিনই জন্মায়,
উন্মত্ত পুরূষ!
মাকালফলের নিঃখুত লাল ভেলভেটি খোসা ফেটে-
ধীরে ধীরে প্রেম মরে যায়! হয়তো চুপ থাকো তাই!
তোমাকেই খুঁজি, সন্তর্পণে কুঁড়ের বেড়ার ফাঁকে, প্রাসাদের-
পাথরে! ডাকে পানকৌড়ি, শোন তার বিপন্ন আর্তনাদ!
উন্মাদ শ্বাপদের পিঠে সওয়ারী পুরূষ আমি!
তবুও পেয়োনা ভয়,
লোটাকম্বলে বয়ে বেড়াচ্ছি আজো দুর্লভ প্রেম, সম্পূর্ণ নিঃখাদ!