তৈলাক্ত তৈল
------ বাবুল মিয়া ইমন
অফিস সহকারী গুণেন কর্মকার-----দক্ষতায় অসার।
আর তার বস হারুন মজুমদার-----গম্ভীর তার ক্যারেক্টার।
অফিস শুরুর প্রথম প্রহরে-
স্যালুট করে এমন ভঙ্গি করে,
যেন আজন্ম গোলাম তার(মজুমদারের)-
সে গুণেন কর্মকার।
অনেক কষ্ট করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এসেছেন স্যার-বলে গুণেন কর্মকার।
কি বলিস কর্মকার-বাসা থেকে অফিসে আসতে পাঁচ মিনিটের বেশি লাগে না আমার।
তার পরেও সার আপনি ঘেমে একাকার-বলে কর্মকার।
এসি বাসা থেকে এসি কার- সবই আমার
কারণ কিছুই নেই ঘামাবার--বুঝলি কর্মকার?
আপনি যা বলেন স্যার--বল এবার তোর কি খবর? কি সমাচার?
আপনার তরে জীবন আমার,
আপনি বিনা অফিসের সব বদক্যারেক্টার-
ইনিয়ে বিনিয়ে বলে কর্মকার।
একটি ছোট অনুরোধ স্যার রাখবেন কি আমার?
তিন কেজি ওজনের একটি ইলিশ সাথে নিজ গাছের লাউ,সখ করে বাপের বাড়ি থেকে এনেছে বউ আমার-
শুধু আপনাকে দিবে-বলে উপহার ।
সাথে ক্ষেত থেকে সদ্য মাড়ানো সরষে এনেছে আবার।
এই নেন স্যার-বলে কর্মকার।
এত কিছু আনার কি ছিল দরকার-
বলে মনে মনে খুশি মজুমদার।
অথচ গতকাল ছিল হাটবার সে(কর্মকার) লাউ,ইলিশ,সর্ষে সব কিনেছে নিজ হাতে তার।
বরং নিজ ঘরে তরকারি নেই-স্বাদ করে খাবার।
বসকে খুশি করে পদোন্নতি নিবে পণ করেছে কর্মকার।
তাই হাটবার থেকে কিনে এনেছে বসের সব প্রিয় খাবার।
খোশগল্পের ফাঁকে বলেন মজুমদার---তোর সহকর্মী রহিম উদ্দিন কেমন-কেমন তার আচার?
বহুত আগেই সময় হয়েছিল তার-পদোন্নতি পাবার--বলেন মজুমদার।
বেটা আস্ত একটা হারামজাদা---কাজে দেয় ফাঁকি সদা ; অফিস শুরুর আগেই ধান্দা করে ছুটি করার--
এই যে আমি স্যার-সবার খেদমতে নিয়োজিত স্যার বলে কর্মকার;
সবার আগে অফিসে আসি-যাই পরে সবার।
যা বলবেন তাই করব-আদেশ দিলে রাত দিন অফিসে রব--হে ! আমার ভূপতি! আমার ঈশ্বর! দয়া করে পদোন্নতি দেন আমার।
চির কৃতজ্ঞ রব;গোলাম হবো আপনার ---বলে কর্মকার।
তুমি ত জুনিয়র টপকে পদোন্নতি পেয়েছো একবার--
করিম ছেলেটা কাজে ভাল
ভদ্রও বটে তাকে কি দেয়া যায় এবার?
ওর কথা বলবেন না স্যার
আপনার বদনাম রটে আড়ালে রোজকার--বলে কর্মকার।
খোশগল্পের ফাঁকে চা চাইলেন মজুমদার --
ঔ বেটা পিয়ন বড়ই খাচ্চর,
ওর চা খেলে পেটে পীড়া হবে স্যার।
তার চেয়ে বরং কফি,চা, জুস,বিস্কুট আমি নিয়ে এসছি এই নেন স্যার-
যা লাগে আপনার---বলে কর্মকার।
অবশেষে বসকে পটিয়েপাটিয়ে সবাইকে টপকে পদোন্নতি পেল আবার---আসলে সে আর কেউ নয়;
সে তৈলে তৈলাক্ত কর্মকার।