সবুজপত্রে সাজানো তরুবাগ
ছুঁয়ে যাওয়া সন্ধারাগ,
বিশ্রামের আশায়
তোমার ছত্রছায়ায়
নীড় গড়ত তাই
বিচিত্র সব পক্ষির জাক।
উত্তরীয় সমীরণ,
রোদেলা বিকীরণ,
করিয়া শোষণ,
তপ্ত ধরনীতে বিছিয়েছো তুমি সবুজ-শ্যামলের আভরণ।
করিয়া সালোকসংশ্লেষণ,
করে নিতে শোষণ-
বিষাক্ত কার্বন।
অক্সিজেন করে উদ্গীরণ,
বাঁচিয়ে রেখেছে
তুমি, মানব জীবন
ঝড়-তুফান,
আছে যত শক্তিশালী বান,
সদাসর্বদা নিজে করে আত্মদান,
প্রাণীকুলে রেখে গেছ অবদান।
আজ তুমি ঝরা পাতা
যা করেছ,তা সবই বৃথা
তাই নেই কোন আত্মসম্মান।
কচি বয়সে তুমি ছিলে সৌন্দর্যের আধার।
বিটপী অরণ্য,
টগবগে তারুণ্য,
তুমি ছিলে-ছিল তোমার ব্যবহার।
আজ নেই তোমার লাবণ্য
তাই পদপিষ্ট করতে তোমায় কারও নেই এতটুকু কার্পণ্য।
যৌবণ ভরা মানব তারুণ্য
আর কচি পাতা পূর্ণ অরণ্য,
সময়প্রবাহে ঝরে যাবে সব
আছে যত রুপ লাবণ্য।
মানব বার্ধক্য ও জরা পাতা
একই জীবন ধারা যেন একই সূত্রে গাথা।
সৌর্য বীর্যে যারা ছিল দাতা
তারা যেন আজ পুরনো ডাইরি আর ডাইরির পাতা।
তোমার পদ কম্পনে কাঁপানো বসুমতী
ধারালো নব্য যৌবণে ঢেউ তোলা নগ্ন যুবতী
জগৎ সংসারে তোমার শ্রমে গড়া যত সুকির্তী
কালের গহ্বরে বিলীন সব
আছে যত স্মৃতি।
ঝরা পাতা আর মানব জীবনের যেন-
একই শোক তাদের একই পরিণতি।
আজ তুমি আক্রান্ত বার্ধক্য জরে,
তাই স্মৃতিভারে
তোমার অশ্রু ঝরে,
বৃদ্ধাশ্রমে মৃত্যু অবধি।
ব্যাস্ত শহর-ব্যাস্ত নগর
সভ্যতার নামে তাই,
ছুটছে সবাই,
নিরবধি।
সুখস্বর্গে নিদ্রারত
পুত্র সুজন আছে যত,
বিষাদঘন শুধু তোমার জীবন নদী।
অলীক এই জীবন সংসার,
আজ কেউ নেই তোমার,
স্মৃতিবহ তুমি পুরনো ডাইরির পাতা।
বার্ধক্যে তুমি একটি ঝরা পাতা।