একুশ তুমি আমার অহংকার
রফিক শফিক আর সালাম বরকতের
নিভীর্ক প্রাণের দূর্বার হুংকার ।
একুশ আমার প্রাণের স্পন্দন
ছেলে হারা মায়ের ক্রন্দন ।
কাব্য রচনে-বঙ্গ বচনে কবি
সাহিত্যচর্চায় দিয়েছে মনন।
বাংলা অভিধানে তাই বিচিত্র শব্দের সমাহার ।
একুশ তুমি আমার অহংকার।
রক্তে রঞ্জিত রাজ পথ
মাতৃভাষায় করতে শপথ
বৃদ্ধা-বণিতার নেই কোন দ্বিমত ।
ভেঙে দিতে 144 ধারার হুঙ্কার
একুশ তুমি আমার অহংকার ।
1952 সাল 21 ফেব্রুয়ারি
বাংলা ভাষায় তুমি আলোর অভিসারী।
বঙ্গ বাউলের একতারায় তাই সুরের ঝংকার ।
একুশ তুমি এনেছো বাংলা ভাষায় নব্য প্রাণের সঞ্চার।
তুমি আমার অহংকার।
শিরায় উপশিরায় তুমি রক্ত কণিকা
সন্ধ্যা রাগে তুমি মাধবী মল্লিকা।
শব্দ চয়নে -কাব্য রচনে
সবই তোমার উপহার ।
একুশ তুমি আমার অহংকার ।
স্তব্ধ করে মাতৃ বুলি
রূদ্ব করতে চেয়েছিল যারা স্বপ্ন-কুলি
কুড়িয়েছে তারা বিশ্ববাসীর ধিক্কার ।
আমি বাঙালি, বাংলা আমার দীপ্ত অলংকার ।
একুশ তুমি আমার অহংকার ।
একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ -
ছিষট্টির ছয় দফা
ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান
একাত্তরের বিজয়ের নিশান
ম্লান করিবার সাধ্য আছে কাহার ।
একুশ আমার অহংকার।
একুশ তুমি -সপ্ত মার্চে দীপ্ত কণ্ঠে শেখ মুজিবের নির্লিপ্ত হুঙ্কার ।
রেসকোর্সে লক্ষ জনতার সমাহার -
মুক্তি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরার করল অঙ্গীকার।
একুশ তুমি আমার অহংকার।
একুশ তুমি ত্রিশ লক্ষ শহীদের
রক্তে অর্জিত মুক্তির গান
ভুলবে না বাংলার আকাশ বাংলার বাতাস
তোমাদের আত্মদান।
একুশ তুমি পল্লি বধূর নকশী কাথাঁরণ আলপনা
তোমার বর্ণে-বর্ণিত তাদের দুঃখ বেদনা ।
একুশ তুমি আদর্শ লিপিতে বালক-বালিকার প্রথম বর্ণমালা -
অ আ ক খ আর র-ফলা য-ফলা ।
যা পাঠ করতে নেই কোনও দ্বিধা -অবহেলা ।
একুশ তুমি নজরুলের অগ্নি বীণা
বিশ্ব কবির গীতাঞ্জলি
তাই প্রভাত ফেরিতে-তোমার বেদিতে
জনতা দেয় পুষ্পাঞ্জলি।
একুশ তুমি ইউনেস্কার সেরা উপহার
বঙ্গ বর্ণে বর্ণীল আজ বিশ্বদরবার।
একুশ তুমি রফিক শফিক ও সালাম বরকতের মায়ের আবদার
তুমি নিভীর্ক প্রাণের দূর্বার হুংকার ।
একুশ তুমি আমার অহংকার।