শিশুর ভয়
==========
মা--মা--মা--
আমার একটা কথা শুনবে;
সময় নিয়ে একটু তোমার,
আমার কাছে বসবে ?
আমার একটা প্রশ্ন আছে,
জানতে চাই মা তোমার কাছে ।
সে যে বড়ো দিশাহীন;
পাগল করে রাত্রি দিন ।
মাঝে মাঝে আঘাত হানে,
চমক দিয়ে ঝিলিক বানে।
উথাল পাতাল ঢেউ তুলে_
বুকের কাছের বেদীমুলে;
নিয়ে যায় আমায় কৌতুহলে;
সেই সবুজ পাড়া গাঁয় ।
যেখানে রোজ রাঙা সূর্য আসে_
কোমল রোদেল পায় ।
সোনালী রোদের মুক্তো ছড়ায়;
সকল মোড়ের কানায় কানায় ।
গাছের শাখার পাতায় পাতায় ,
শিশির ভেজা ঘাসের ডগায় ।
পাতার ফাঁকে কিরণ তেড়ে,
পরছে এসে দিঘির ক্রোড়ে ।
জলের ভাঁজে ঝিলিক মারে_
দিঘি- বধূর আঁচল পারে ।
চারুকলার নিখুঁত কাজ_
অপরূপায় দিঘির সাজ ।
হীরক দ্যুতি টিকরে পড়ে,
কিরণ মালায় সবার ঘরে ।
দিঘি বধূর হীরক বরণ,
চক্ষু সবার করে হরণ ।
ফুলের কুঁরি উঠে জেগে,
রবির কিরণ ছুঁতে বেগে।
কুঁরির পাপড়ি খুলে দুয়ার;
সাধ হয় যে আলো দেখার ।
তাক লাগিয়ে কমল দলে,
ফুটে যখন দিঘির জলে!
ছোট্ট ফুলের পাপড়ি দল,
বর্ণে গন্ধে ক্ষীণ উজ্জ্বল।
সবাই ওরা উঁচিয়ে বলে,
দিঘির জলে পদ্ম-ফুলে।
তুমি হলে জলের তাজ_
গরব করো দিঘির সাজ
দেখি মা আমি -----
চারিপাশে আলোর মেলা,
পাখীরা সব করছে খেলা।
কিচিরমিচির শব্দ আসে -
কানে আমার ভেসে ভেসে
আম গাছের ফাঁকে ফাঁকে ,
পাতার ঝোপে চড়ুই ডাকে ।
এমন মধুর আমেজ হাওয়া ;
শহরে থেকে যায় কি পাওয়া ?
আমরা থাকি দশতল কক্ষে_
পড়ে গেলে, করবে কে রক্ষে?
ভয়ে আমার বুকটা কাঁপে,
বলি না মা,-- ভয়ের চাপে ।
বদ্ধ ঘরের দেয়াল পাশে,
প্রাণ টা আমার হাহুতাশে,
ছটফট করে, ঘুমিয়ে যাই ;
স্বপন ঘোরে দেখতে পাই ।
আমি খেলছি গায়ের পথে
মিলে- মিশে সবার সাথে ।
মা,---
আমার চোখে ছবি ভাসে,
রাত দুপুরে স্বপন আসে ।
কঁচি কাঁচার ফুলের মেলায়,
শহর ছেড়ে গাঁয়ে পালাই।
চুটিয়ে সবাই করব খেলা,
সকাল থেকে সন্ধ্যা বেলা ।
মাম্পী নামের ছোট্ট মেয়ে ;
ডাকব তাকে কাছে গিয়ে ।
খেলবি সখী, আয়না সাথে ;
সকল বেলায়, সকল প্রাতে ?
বাবুল আচার্যী 18/01/2020