হে ঈশ্বর !
আমি পরিপূর্ণ এক নারী ;
সৃষ্টির ভ্রূণ -মূল সত্তার অধিকারী।
আমি তোমার কল্প হৃদয়ের এক রূপালী কল্পনা _
তোমার বহু দূর দূরান্ত দর্শনের অভিনব উদ্ভাবনা ।
তিল তিল ঢেলে দিলে সাজিয়ে সংবেদনাতে--
দৃষ্টি -কৃষ্টি ও সৃষ্টির সমবেত সুর- সঙ্গীতে;
ভাবনার কল্পনায় তার বাস্তব রূপ চিত্রপট অবতারণায়;
উজার করে গড়ে ছিলে অবিকল কলসের ছায়া ফেলে,
সর্বংসহা ধরণীর আদলে।
কুশল হস্তের সুনিপুণতায় ভরে ছিলে পুঞ্জীভূত মায়া,
সে সব ফুলে ফুলে ঘট ভরা জল কানায় কানায় ;
সুগন্ধি গোলাপ,বেলির সুবাসের মেঘনায় ;
টলমল করে জীবন সরোবরে ,
গিরি শৃঙ্গ ভেদ করে উপচে পরে,
আবার কখনো বৃষ্টি হয়ে তোমার মনে প্রাণে ঝড়ে অঝরে ।
হে ঈশ্বর !
আমি এক নারী ।
তোমার কল্পনার প্রসূত স্বত্বাধিকারী,
তোমার কোমলকমলদল মন বলিহারি ।
শান্তির দুয়ারে খেয়ালীর কোন আলাপনে_
কোন রাগ আলাপের সুর ও লয়ের তানে ;
হাল্কা সুরে বাজিয়ে হৃদয়ে মনোবীণ,
উদাত্ত কণ্ঠে কি গান গাইলে তুমি যেদিন _
মনে হয়, কথা মালা, তাল লয় ,সুর ছন্দ_
কল্পনা আলপনা মিলাপের সেই দিন ছিল সুদিন ।
তোমার গানের চমকে, ধমকে ও লহমায়,
বাতাসে কম্পন উঠেছিল সকল দিশায়;
তাই তুমি মেঘের জল ভরা খামে_
বৃষ্টির লেখা পাঠিয়েছিলে এই ধরাধামে ;
আমার জন্মের আগমনী বার্তা ।
তোমার মনে আমায় নিয়ে ছিল যে_
একটা মৌলিক কবিতা ।
মেঘমালা হতে তায় ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি বিন্দু
এসরাজের সুরে ধরণীতে নেমে আসে ;
সুমধুর ফুলের সুবাসে ।
এক আনন্দের বন্যা ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে _
হাসির ছটায় লালিত্য ছড়ায় দিগ্বিদিকে।
অন্তরে, তোমার বহে চলছিল যে গঙ্গার ধারা _
কলকল সঙ্গীতে মোহিত করেছিল যারা ;
ওদের নিহিত শক্তি আমি নিয়ে চলি তাই
জীবনের প্রতি আবর্তে শক্তির খোঁজ পাই।
হে ঈশ্বর
আমাকে পাঠালে তুমি কোমলতা করে !
বেতের মতো উড়ে না যাই কঠিন ঝড়ে ।
আমি একজন সাধারণ সুন্দরী মহিলা _
কণ্ঠস্বর মধুর কেহ কেহ বলে কোকিলা ।
তবুও কত পুরুষ কানে কানে ফিসফিস করে;
বহু পচা শব্দ ব্যঞ্জনার গন্ধরা বাতাসে উড়ে ।
বটবৃক্ষের শিক্ষাদানে আমি যথেষ্ট পরিণত ;
অনেক বিপর্যয় কে করতে পারি তাই প্রতিহত ।
মোকাবিলা করতে মনকেই ঢাল বানাতে হবে
জানি করতে নেই ভয়,
অপশব্দের গঞ্জনার বেগ আমাকে যে_
সহ্য করতে হয়।
আমি থাকি তায় নিরুত্তর ;
মৌনতায় পেয়ে যায় ওরা সদুত্তর ।
এই ত মাত্র ভোরের প্রথম পহলে;
ঘুম ভাঙেনি যারা এখনো আছে শীষ মহলে ।
মৃতবৎ শরীরে শব্দরা তাই ঢাকা পড়ে আছে
আমি জানিনা, ঐ দেহে শব্দরা কিভাবে বাঁচে?
আমার মনে প্রাণে তায় _
এখোনো জানালা ভেদ করে আসে নির্মল বাতাস ;
আমাকে এনে দেয় যেন এক পশলা বৃষ্টির আভাস ।
এই বাতাস আমাকে যথেষ্ট সমীহ করে,
আবার ,..অনুভবে মন ভরিয়ে দিয়ে আদরও করে।
আমার চোখ ভেজা কাজলে _
ছুঁয়ে যায় অধরে ,কপোলে ও গালে।
আমার কালো চুল নিয়ে খেলা করে,
নিজের সুতোয় বেঁধে চুল গুলোকে_
তরঙ্গিণী সাজাতে চায়, ঢেউয়ের আকারে ।
আনন্দ প্রদানের ইচ্ছায় ,নিরাকারে নির্দ্বিধায়_
আমিও তাই আনমনে আনন্দ প্রকাশ করি ,
ওকে স্বাগত জানাই ।
লোকে যাই বলে বলুক,
বাতাসের কাছে আমি তাই নির্লজ্জ হয়ে যাই ।
বাবুল আচার্যী 26/01/2020