আমি আজন্ম বিদ্রোহী
মহাকালের বঞ্চিত পথবাসি।
আমার আমিতে শোষিতের তরে
সঞ্চিত রাখি হাসি।
আমি আটপৌড়ে আটকে পড়া
নবীন থেকে প্রবীণ যারা।
তাদের সাথে আছি
আমি এ গ্রহ মাঝে দ্রোহের পথে
লড়াই করেই বাঁচি।
জমিনে আছে কমিন যত
থাকিস হুঁশিয়ার।
আমি আজন্ম বিদ্রোহী
মসিতে আমার শানিত ছুড়ির ধার।
আমি গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে
পলকে যাই ছুটি।
পীড়িতের তরে থরে বিথরে
কুসুম হয়ে ফুটি।
হুঁশিয়ার হুঁশিয়ার
আমি লৌহকঠিন মানব।
সাবধান যত জমিনের বুকে
অসুর,দৈত্য, দানব।
আমি সমস্বর
বঞ্চিতের মলিন বদন।
আমি অভুক্ত গৃহবাসিনীর
কাঙ্খিত সেই ওদন।
আমি দুর্মর
আমি দৌবারিক।
আমি দুহাতে দুর করে যাই
দুনিয়ার যত তামসিক।
আমি বিলে, ঝিলে ফুটন্ত তামরস
তাদেরই তরে ফুটি যারা থাকে অভুক্ত উপবাস।
আমি কালের কালাকাল
আমি আজ অবিধি হেরিয়া,
হয়েছে পাষাণ আমার হিয়া
দুর হও যত  ধরার বুকে
আছিস রে চাড়াল।
আমি গিরি, দরি পর্বত মালা
অতি মনোহর, সমস্বর।
বাজাই বিজয়ের ডঙ্কা আমি
শুনি অনন্ত ক্রন্দন ধ্বনি
ব্যথাতুর, নিপীড়িতের চিৎকার।
আমি আজ বিজয়ী বসন খুলে
আসন করেছি ঐ দলে
যারা মহাকাল ধরে পৃথিবীর পরে
ভাসিছে রে নয়ন জলে।
আমি আজ বাজাই সাম্যের সমস্বর
জেগে ওঠরে  মানিক আমার বীর সেনানী দল।
আকাশপথে জলে, থলে আজ উড়াইয়া নিশান
আজ হানবো বিষাণ পাষাণ বুকে পণ করেছি প্রবল।
নীল নকশার মানচিত্রে দেখি
শোষিত প্রাণের ছবি।
দূর্মদ যৌবন ফুসে উঠেছে
সাথে কাঁদে আজ রবি।
সূর্য বলেছে স্বতেজে জ্বলবে
পুড়ে করবে ছারখার।
শোষনের আসনে শোষক যারা
থাকিস রে হুঁশিয়ার।
আমি পিশাচ যত ঢালবো সাঁচে
মারব পিশাচ ওদেরই ধাঁচে।
মহাকালের হিসসা নেব
জ্বালবো যত আগুন আছে।
অপশোষনের বিরুদ্ধে আজ
আমার দীপ্ত অভিযান।
আয়রে ওরে আলোর দুলাল
ভুলে যাই অভিমান।
আমি মুক্তির মহামন্ত্রে পড়ে
ভাঙব  প্রাচীর লাথি মেরে।
সাহস থাকলে সামনে আয়
সাম্যবাদের এই সমরে।
বহে মহাকালের রক্ত গঙ্গা
আজও তাই যায়নি শঙ্কা।
আমি তাই শঙ্কা ছেড়ে অবনীপরে
পুলকে বাজাই মহা ডঙ্কা।
আজি ডঙ্কার তালে আয়রে দলে
আজিকার এ নভোতলে।
থাকিস নে আর ঘরের কোণে
নাহিয়া নয়নের জলে।
আকাশ ভরা সূর্য, তারা
আলোক আকাশ ভরা।
সাম্যবাদের সমরে আজ
কে দিবে আয় সাড়া।
জাহান্নামে জ্বলার আগে
আগুন জ্বালি বোধে।
শোষিতের তরে পৃথিবীর পরে
আয় রে প্রতিরোধে।
আয় হুঁংকার দিয়ে হেঁচকা টানে
ছিড়ে ফেলি লোহার শিকল।
জেগে ওঠে মানিক আমার
আকাশ, পাতাল করি দখল।
নইলে যে আজ নাই রে রেহাই
সবহারানোর দিসনে দোহাই।
আয় রে করি অমর সমর
সাম্যবাদের নিশান উড়াই।
শত শোষিত, বঞ্চিত ঐ উঠেছে  জাগি
আমিও তাদেরই দলে ওদেরই অনুরাগী।
চুপসে গিয়ে মরার আগে
আরেকবার  উঠি জেগে।
আমি আজন্ম বিদ্রোহী
অমর অমরাবতী।
শোষিত, বঞ্চিত শ্রেণিটিকে
ভালোবাসি নিরবধি।

মহাবিশ্বের, মহাকালের
বঞ্চিতের তরে।
আজও জ্বলি
তাদের কথা বলি
আমার কবিতা ভরে।
আমি আজ মহা ভয়, মহাকাল
প্রবল অগ্নিউগারি।
শোষিতের তরে পৃথ্বীর পরে
শহীদের তরবারি।
আমি মহাসাগর বুকে বিশাল বারিধি
অতল মহীসোপান।
আমি নিত্য সত্যে করি নৃত্য
করি সত্যের জয়গান।
আমি রংধনুর সাত রঙে আঁকি
স্বপ্নের সরল ছবি।
আমি গগনভেদিয়া পুব আকাশের
আশার উষার রক্ত রবি।
উঠ রে জাগিয়া হিম্মত হাঁকিয়া
সত্যের সুর সৈনিকদল।
মসির জোরে মেদীনির পরে
তাথৈ তাথৈ চলরে চল।
ভাঙরে লাঠি, বুকে পিঠে
অসুরের সুর যাবে টুটে।
আয় হুঁংকার দিয়ে ঝংকার তুলে
দুর করি বাঁধার বিন্ধাচল।
আয় রে নিয়ে উল্কার গতি
যাইরে উর্দ্ধপানে।
আয় রে আমার নবীন প্রাণ
অভিযানের আহবানে।
আয় প্রাণে প্রাণে তুলি আওয়াজ
নাইরে সময় নাইরে।
টান করে ঐ বুকের ছাতি
আয়রে নবীন আয়রে।
পাষাণ প্রাণে সঞ্চিত আজ
শয়তানের ঐ ভেল্কি।
সরল প্রাণে গরল আনে
হাতে ধরায় কল্কি।
গোঁড়ামি আর ভাড়ামিতে
ভরে গেছে দেশটা আজ।
শক্ত হাতে রুখতে হবে
নইলে শিরে পড়বে বাজ।
সর্বহারার সব মুকুট
ছিনিয়ে নেব আজ।
তাধিন ধিন নেচে নেচে
করব কুচকাওয়াজ।
পঁচা অতীতের পথে চেয়ে
যায় রে চলে বেলা।
সুযোগ বুঝে নিঠুর পাষাণ
খেলছে শোষণ খেলা।
জীবন বোধের জাগরণে
আয় সেনাদল মহারণে।
পায়ের নিচে পিষে ফেলে
দখল নিবি ঐ আসনে।
আমি আজন্ম বিদ্রোহী
দ্রোহের আকাশে ধুমকেতু।
আকাশ, বাতাস কাঁপায়ে আজি
গড়েছি অমর অগ্নিসেতু।
আমি কেড়ে নেব হাসির রেখা
উগরে দেব অগ্নি যত।
আমি আজন্ম বিদ্রোহী
করিনা মম শির নত।
আমি পরার্থে করি আপনারে দান
করি শোষিতের জয়গান
আমি আজন্ম বিদ্রোহী
ভয়ডরহীন সাম্যের গান গাহি।



রচনাকালঃ ২১ মার্চ ঢাকা।
মহাবিশ্বের, মহাকালের বঞ্চিতের তরে
আজও জ্বলি তাদের কথা বলি
আমার কবিতা ভরে।