তোমাকে তো পাইনি আমি;
তাতে কী?
অন্তহীন এক সুনীল সাগর তো আমি পেয়েছি,
যে সাগরের নেই কোন তল, নেই কোন কূল,
চারদিকে শুধুই দিগন্তবিসারী ফেনিল দুঃখরাশি।

তোমাকে পাওয়ার ধূমায়িত হিম নেশায়
একদিন পৃথিবী কাঁপিয়েছি।
সাগরমগ্ন দূর্গমগিরি থেকে এনেছি ভালোবাসার নীলকান্তমণি।
উদভ্রান্তের মতো পৃথিবীর পথে পথে ঘুরে,
হাজার বছরের তপস্যায় ক্ষয়িত করেছি যৌবন।
জীবনের এতটা পথ পেরিয়ে এসে শুধু নিঃস্বই হয়েছি।
তবুও তোমাকে পাওয়ার তৃষ্ণা আজও তো ফুরায়নি।
অনিঃশেষ অবিনাশিত সে তৃষ্ণা।

ঐ সুউচ্চ হিমাদ্রী কি আমার চেয়ে দুঃখী
যার কান্নার রুপালি জলে সৃষ্টি হয়েছে কত কত পেলব নদী?
আর ঐ শ্রাবণের কালো গহিন মেঘ যার
কান্নার স্নিগ্ধ বৃষ্টিপ্রলেপে এখনো শীতল হয় এই তপ্ত পৃথিবী?

ঐ নদী আর শ্রাবণের বৃষ্টির মতো আমারও তো সৃষ্টি,
যা অনন্তকাল আচ্ছন্ন এক নিবিড় সুরধ্বনি।  

এ-জীবনের সব মায়া ছেড়ে পাখিদের মতো হয়ে,
বেদনার সব নীল জল থেকে স্নিগ্ধ আগুনঝরনা উড়িয়ে,
ভোরের শিশিরভেজা নরম ঘাসে নিঃশব্দে পা ফেলে ফেলে,
হয়েছি তো আজ আমি এক আশ্চর্য কবি;
যে কবি আজ সব পারে,
গহিন সাগরের হিম জলে ভেসে
খেলা করতে পারে মাছের সাথে,
অবারিত ঐ সুনীল আকাশে ভেসে
কথা বলতে পারে পাখির সাথে,
হিমালয়ের মতো স্পর্শ করতে পারে ঐ সুউচ্চ মেঘরাশি,
আর শিশুর মতো মহা-উল্লাসে জড়িয়ে ধরতে পারে সমস্ত পৃথিবী।