দেহ, দেহ, দেহ।
দেহই প্রেমের একমাত্র নিবাস।
হ্যাঁ আমি বলছি, দেহই প্রেমের একমাত্র নিবাস।
এখানে প্রেম অনাবিল উল্লাসে ডানা মেলে উড়ে বেড়ায় মুক্ত আকাশে, পায় পরিতৃপ্তি আর পরিপূর্ণতার স্বাদ।


শরীর-ব্যাপার বলে কামের মূল্য বরাবরই আমাদের কাছে কম, আত্মার ব্যাপার বলে প্রেমের মূল্য বেশি।
আচ্ছা তুমি কি বলতে পারো প্রেমের জন্ম হয় কোথায়?
হৃদয়ে?
না, হৃদয়ে না।
প্রেমের জন্ম হয় তো মস্তিষ্কে।
বস্তুত প্রেমের জন্ম হয় কাম থেকেই, কামই যখন আত্মার রঙ লেগে সুন্দর, স্নিগ্ধ এবং পরিশীলিত হয়ে ওঠে তখনই তা রূপ নেয় প্রেমে।
তাই দেহসম্ভোগকে বাদ দিয়ে প্রেম কখনো টিকে থাকতে পারে না, টিকে থাকলেও পরিপূর্ণতার স্বাদ পাওয়া হয় না।
দেহই প্রেমের অক্সিজেন।
দেহই প্রেমের জীবন।


কি বিশ্বাস হচ্ছে না?
তুমি কি জানো, কত অজস্র যুগলের সংসার ভেঙে যায় প্রতিদিন এ শহরে?
দেহের মাধ্যমে প্রেমের পূর্ণতা পাওয়া হয় না বলে যুগলগুলো একসময় অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে।
তাহলে এইসব যুগলের মধ্যে কি প্রেম ছিল না?
ছিল বৈকি, কিন্তু দেহের মধ্য দিয়ে প্রেমের পূর্ণতা না পাওয়ায় সংসারগুলো শেষমেশ ধাবিত হয় বিচ্ছেদে।


অথচ প্রতিমুহূর্তে দেহকে আমরা কতই না অগ্রাহ্য করি, কতই না অবহেলা করি, করি উপেক্ষা!
আহ্, কী নিদারুণ কষ্টের এই উপেক্ষা! কী নিদারুণ কষ্টের এই  বোধহীনতা!
দেহসম্ভোগকে আমরা ভীষণ ভয় করি, ঘোর নিষিদ্ধ মনে করি, ঘৃণাভরে দেখি।
দেহের কথা আসলেই প্রতিনিয়ত পাপাচারভয়, ধর্মভয়, সমাজভয় আমাদের শরীর-আত্মাকে আড়ষ্ট করে রাখে, আমরা তীব্র নিন্দা আর ধিক্কারে উগ্রমূর্তি ধারণ করি।


সত্যিকার প্রেম দেহ খোঁজে না-এটা আবহমান কাল ধরে চলে আসা একটি ডাহা, নিরেট ভ্রান্ত কথা।
দেহ ছাড়া প্রেম যেন একটি খাঁচায় বন্দী পাখির মতো; জীবন্মৃত।
বিমুক্ত হওয়ার জন্য কতই না ছটফট করছে পাখিটি!
তোমাকে করজোরে অনুনয় করছি, ধর্মের নিগড় ভেঙে ঐ পাখিটিকে তুমি মুক্ত করে দাও।
এখনই ওকে মুক্ত করো।
মুক্ত হয়ে পাখিটি অনাবিল  উল্লাসে মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়াক।
পাখিটি মুক্তির স্বাদ পাক।
জয় হোক দেহের।
জয় হোক শরীরের।
প্রেম পূর্ণতা পাক।


প্রবহমাণকাল ধরে তুমি প্রেমকে শুধু মনসর্বস্ব করে রেখেছো।
আজ থেকে আমার সাথে তুমিও নিঃশঙ্কচিত্তে বলো, প্রেম হোক দেহময়, মনময়।
তারপর?
তারপর সত্য ও সুন্দরের বর্ণিল অনিন্দ্য ঝরনাধারা ছড়িয়ে পড়ুক পৃথিবীময়।