আমি হয়তো পাখিই ছিলাম, মানুষ হয়ে জন্মেছি।
বুকের মধ্যে এক আকাশ চেপে মানুষ হয়ে চলছি।
মানুষের মতো মুখ আছে, হাত আছে, পা আছে, চোখ আছে, কিন্তু কখনো মানুষ হতে পারিনি।
বুকের মধ্য গহন এক আকাশ নিয়ে কেবলই পাখির মতো ভাসছি।
কেউ বুঝুক, বা নাই বুঝুক আমি আমার মতো উড়ছি।
চারিদিকে জীবনের তুমুল কোলাহল বয়ে যাচ্ছে, আমি শুধু নৈঃশব্দের দিকে হাঁটছি।
দুঃখ পেলে আকাশ দেখি,
নিবিড় অরণ্যে দৌড়ে ছুটি
প্রবহমাণ ঝরনার শব্দ শুনি,
কোলাহল থেকে দূরে সরে আবার সেই প্রসন্ন আকাশে ফিরি।
আমি রক্তমাংসের মানুষ, কিন্তু কখনো চিরাচরিত মানুষ হতে পারিনি।
আজন্ম এক পাখিই রয়ে গেছি।
মানুষ হলে মানুষের মতো বেশভূষা থাকত, সংসার থাকত, ঘরের মধ্যে যৌবনবতী নারী থাকত, সন্তানের জন্য চিরাগত আকাঙ্খা থাকত, নিয়ত প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির উৎকন্ঠা থাকত, দুঃখ পেলে মুষড়ে যাওয়ার ভয় থাকত।
মানুষ হলে অনেক কিছুই থাকত।
কী আনন্দমধুর এ বেঁচে থাকা!
কী দুঃসহ এ বেঁচে থাকা।
তবুও এভাবেই কেটে যাচ্ছে আমার দিন-রাত্রি।
কেউ কেউ কখনো মানুষ হতে পারে না, জীবনভর মানুষ হতে গিয়ে পদে পদে হয় পরাহত, থেকে যায় মানুষরূপী এক ভিন্ন প্রাণী।
অনেক মানুষের মাঝে থেকেও তাঁরা ক্রমান্বয়ে হয়ে যায় আলাদা।
আজন্ম বুকের মধ্যে পুষে বেড়ায় এক অজানা অচিন পাখি।
শত কষ্টেও বুকের মধ্যে আমৃত্যু বয়ে বেড়ায় এক ধূসর রহস্যময় নদী।