কখনো বিশ্বাস হবে না আমার
মৃত্যু যদি আসে দোয়ারে তোমার
প্রিয়,তুলে নিও একটি লাল গোলাপ
যে গোলাপে  সুভাষ রবে আমার
প্রার্থনা রবে শুধু, আত্মহত্যা না যেন হয় তোমার।
যদি খুঁজে পাও খানিকটা সময়
মৃত্যুরও কালে স্মৃতির দিনগুলো
করিও রোমন্থন;
কখনো বিশ্বাস হবে না আমার
তোমার শরীর জুঁড়ে অসংখ্য ক্ষত
যন্ত্রণার প্রলেপ লাগিয়ে করো আত্ম চিৎকার
এসব বিসংবাদ তোমার নামেই
প্রতিটি গোপন বস্তু ভাসবে অভিসারে।
প্রতিটি শহর আর দেশে যেন তিক্ত প্রেম
হিটলারের বিষাদ নিবিড় নিঃসঙ্গতা
জখমে বিক্ষত ফিলিস্তিনের সেনারা
শিশুদের আত্মনাদ আর যেন মুক্তিসেনারা
রাইফেল হাতে নিয়ে জীবন যুদ্ধে উড়ন্ত নির্ভীক।
তুমি দেখবে চক্ষু মেলে, কত নিষ্পাপ শিশু মৃত্যুর কোলে
হাসি মুখে নিচ্ছে বিদায় এই পৃথিবীর অনাদরে।
এই বিশ্ব আমায় বিষণ্ণ করে তুলে
মানুষ আর মানুষের ইচ্ছের তলে
মৃত্যু আর জীবনের সম্প্রীতির জোরে
কত রূপসী নারীর কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হয়।
প্রিয়, যখন কবিতা পাঠে নিমগ্ন হয়
বলতে পারো, একাত্তরে রক্তে ভরা এই নদীর স্রোত
কোন সে প্রেমে দিয়েছিল প্রাণ?
এতো নারী, এতো শিশু, এতো ভাইয়ের কেন গেল প্রাণ?
শহীদ বলে পরিচয় দিয়ে দেই মোরা সান্ত্বনা
কতটা হাস্যকর মৃত্যু ছিল প্রত্যেকের
দেশের প্রেমে, দেহে পচন ধরিয়ে ভাসিছে নদীর জলে।
এই ছিল কি তাদের প্রাপ্য?
একটি নতুন দেশ, একটি নতুন নাম দিয়েছিল উপহার।
দেশের আনাচেকানাচে হাজারো গণকবর পড়ে আছে
কত গন্ধ, মৃদু বাতাস বয়ে প্রবেশ করে আমার শরীরে
আমি তখন বিষণ্ণ হয় ভালোবাসার শব্দে
প্রেমে পড়ে কতটা ভয়ংকর ভবিতব্য হয় এই সমাজে।
প্রিয়, যখনই অতিক্রম করবে হৃদয় সীমান্ত
বুক ভরে টেনে নিও নিশ্বাস,
হৃদয়ের সীমান্তে ছড়াবে আমার
একটি লাল গোলাপের রক্ত ঝরা সুভাষ।
এই প্রেম, এই ছায়া, এই অনুভূতি আমায় বিষণ্ণ করে তুলে
তারা হত্যা করে বটবৃক্ষের ছায়া
তরু আর তার ভিতর বয়ে চলা নিশ্বাস।
ধ্বংস করে দেই পাহাড়-পর্বত
নিধন করে প্রান্তর ভূমিতে গজে উঠা সবুজ ঘাস।
কিন্তু কেউ আমার মতো করে তাদের কবিতা লিখেনি
আজ অব্দি একটি শব্দও তরু বলে প্রকাশ হয় নি।
প্রকৃতির নিষ্পেষিত অববাহিকা তোরণ
এই সমাজের কঠিন কুঠারাঘাতে শেষ হচ্ছে।
তারা বলে, মানুষের গুরুত্ব আছে বটে
প্রকৃতি তাহারই তরে বেঁচে আছে মজে।
নিষ্ঠুর তাদের মর্মকথা; আমিও কি তাই?
প্রিয়,কখনো আমি শুনতে পাই মৃত্যুর কলরোল নৃত্য
বিপুল মানুষের সমাবেশে বাজিছে সংগীত
জন্ম নিচ্ছে নিষ্ঠুরতম সমাজের ভবিতব্য শিশু
নিষ্পেষিত হতে, হত্যার বেঁড়ি গলায় নিয়ে
আবারও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে।
কারা এরা? জীবনের অজেয় প্রান্তরে
অত্যাচারী আদালতের আদেশে
জয়ী শিশু কেঁদে উঠে।
এই প্রেমের মৃত্যু ঘটেছে সমাজের রুঢ় আয়োজনে
আগামীকালের বাহুতে ক্ষয় ধরেছে
নক্ষত্ররা ঘুমোট নিয়েছে লোকালয়ে
শূণ্যতার সাম্রাজ্যে জড়িয়েছে রক্ত গোলাপ
একটি লাল রক্ত গোলাপ উপহার দিয়েছি
ক্ষত বিক্ষত হৃদয়ে একটি রক্ত গোলাপ
জানিয়ে দেই মোর উপস্থিতি।
ঘড়ির কাটা তারে প্রিয় তোমার জানান
গুণে নেব দূর হতে তোমার নিশ্বাস
আগত কোনো কালে শতাব্দীর কোনো অবসরে
পৃথিবীর পথে বিলাপ হবে তোমার-আমার।
গুঞ্জনে রয়, নিরবে রয়, হৃদয়ের গোপন অভিসারে থয়
কখনো বিশ্বাস হবে না আমার
ক্রোধে,অভিমানে,দুঃখে নাম মুছে রই।