এখন আর অনুভূতির ধরাবাঁধার নিবদ্ধতা
আনন্দ-হাসি-খুশি, দুঃখ-বেদনার অবকাশ নেই।
প্রবহমান ধারার সাথে এক অমোঘ চুক্তি হয়েছে
আমার আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা স্মৃতি
শীতের কুয়াশা তে ঝাপসা হয়ে উঠা মুখগুলো
বইয়ের পাতায় হারিয়ে যাওয়া 'আমি' টা
রাষ্ট্র আর সমাজের মুখরোচক খবর
কোনো কিছুতেই আর ধরাবাঁধা নেই।
ধর্মতন্ত্র আর কুসংস্কারে ঝুঁকে পড়া সমাজ
সত্য ও মিথ্যের স্বার্থান্ধ ব্যবহৃত মানুষেরা
কবর ও শশ্মানে পড়ে থাকা মৃত হাড়গুলো
কোনো কিছুতেই অনুভূতির ধরাবাঁধা নেই।
এখন আর প্রেমের অনুভূতি অশ্রুপাত করে না
বিষপানে মৃত্যু এসে আঁকড়ে ধরে না
অমরত্বের বিষাদে আদির পথচলা
পৃথিবীর পথে প্রেমের পুষ্প মুছে যায় না
তবুও স্বাদ- বিষাদের মধ্যপথে এই যে অমরত্ব
ঈশ্বরকে নিঃসংকোচে তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
'আমি' নামের সৃষ্ট জীবের এ কিরকম অমরত্ব?
অনুভূতির ঝর্ণা থেকে কেন আমি মুক্ত?
রহস্যের অগ্নিদাহে কেন আমি দগ্ধ?
প্রেম আর অ-প্রেমের আবেগ উচ্ছ্বাস
সুখ আর আনন্দের যে হৃদয় অভিলাষ
সত্য আর মিথ্যের যে চূড়ান্ত মাপকাঠি!
নিষ্কলুষ, আপন হতে মুক্ত অমরত্ব সে।
ঈশ্বর বাণী স্বপ্ন বলে,
নিরন্তর বয়ে চলে
অমোঘ এক চুক্তি হয়েছে ঈশ্বর আর আমাতে।
পুঁজিবাদ আর সমাজতন্ত্রের কুঠারধারী
গণতন্ত্রের নামে সর্বোচ্চ ক্ষমতা ভোগকারী
আমি ব্যক্তি আর তাদের মধ্যে বিরোধকারী
ক্ষমতার লিপ্সাতে ব্যক্তিসত্তার হত্যাকারী
সমাজ ও রাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ শক্তিধর মনে করা
আমার কোনো কিছুতে অনুভূতির ধরাবাঁধা নেই
রক্ত মাংসে বয়ে চলা রক্তের স্রোতধারা
সৃষ্টি জীবের শ্রেষ্ঠত্ব বলে চলা 'আমি' ব্যক্তি
পৃথিবীর উচ্ছ্বাসে আবেগে বিগলিত না হওয়া
ধ্বংস আর বিস্ফারণের সংকটে বয়ে চলা সমাজ
নির্বোধে আচ্ছন্ন হয়ে থাকা চতুরতা কর্মধারয়
কিসে হবে তাদের মুক্তি? ঈশ্বর কি তার কিছু চাই!
আমার আর প্রেমে অনুভূতির ধারা নেই
তরঙ্গে বয়ে চলা প্রবহমান অমোঘ চুক্তি
অমরত্বে পৃথিবীর ধরাবাঁধা থেকে করেছে মুক্ত।