এই পথ যেন দীর্ঘ প্রসারিত আমার পদক্ষেপে
শেষ যেন না হয় জীবনের এই পদযাত্রা।
কোথায় গেলে শেষ হবে? কোথায় নিজেকে লুকাই?
নিজের পরিচয়ে নিজেই হারায়
উৎসব, উল্লাস সব যেন মিথ্যে মায়া
মানুষের ভিড়ে, সব যেন আমারই কায়া।
আমি নিরবে একান্তে ভেবেছি খুব
চিন্তাগুলো অসুস্থ ঘনীভূত আস্তো ভূত
রক্তের স্রোত, মাংসল পিণ্ড গড়িয়ে পড়ছে শরীর হতে
ঝাঁপিয়ে হুমড়ি খেয়ে নিচ্ছে তারা নিজের মতো।
আমি এই উৎসবের এক পৌরাণিক দাতা
শ্রমিকের বেশে রয়েছে যারা তারাই আসল গ্রহীতা।
এই উৎসবমুখর আনন্দে আমার সঙ্গী নেই
আমি চলে যাব আর মৃত্যু ছুঁয়ে দেখব
এই পৃথিবীর অনন্য পাথরে মগজ ঠুকবো
আমি, প্রভু আছে স্বীকার করেছি
তারপরেও অভিযোগ জানিয়েছি প্রভু নেই।
চিৎকার করে বলেছি যে প্রভু নেই
যদিও সেই প্রভু তুলে নিলেন এক স্বর্গের নারী
নরকের অতল হতে বেদনা মিশ্রিত এক নারী
যার সামনে কম্পিত হবে এই পৃথিবীর সকল পাহাড়;
তিনি স্বর্গের বেদনাহত নারীকে আমার সামনে তুলে ধরলেন
প্রভু বললেন: তাকে ভালবাসো!
প্রভু হাসি মুখে নিজের শান্ত ছায়া দেখালেন।
আকাশের নিচে সুবজ ঘালিচা যেন উর্বর হয়ে গেল
জীবন্ত প্রাণিদের ভিতর যেন অমৃতসর ঢেলে দিল
আমি এক বেদনাহত পুরুষ হয়ে ধ্বংস হলাম
প্রভু মৃৃদু হেসে আনন্দ প্রকাশ করলেন।
প্রভু ভাবেন: একটু অপেক্ষা করো প্রিয় আমার
তোমার গায়ে জড়িয়ে আছে যে নকশী কাঁথা
সেই কাঁথায় রয়েছে পুঁড়ে যাওয়া শরীরের ঘ্রাণ।
শয়তানের মাংসল পুঁড়ে উড়াইবে ক্ষার গন্ধ ধোঁয়া।
তুমি ভয়ে উন্মাদনার প্রান্তে দাঁড়িয়ে
হীরে কাটা ছুরি নিয়ে কাটবে শরীর।
আমি ছুটে চলেছি আর্তনাদের কবিতা বদলে নিয়ে
এক দীর্ঘশ্বাস ভরা হৃদয় উগরে দেয়া কবির মতো।
এই প্রয়োজন শেষ হয়েছে!
হিসাবের খাতায় অধিকার মুছে গিয়েছে!
যে কোনো ক্ষেত্রেই সমাপ্তি এসে যুক্ত হয়েছে
আমি জানি, হটাৎ করে বুক ফেটে পড়বে
কর্কশ কোনো চিৎকারে অভিযোগ জানাবো
যদি সত্যিই তুমি থেকে থাক হে প্রভু
এই আকাশ আর নক্ষত্র পতন যদি হয় তোমার হুকুমে
এই নিত্যকালের যন্ত্রণা আর গ্লানিবোধ কেন যায় না মুছে?
কেন এই অগ্নিপিণ্ডে দাঁড় করিয়ে হয়ে আছো নিশ্চুপ?
হে প্রভু, তবে পড়ে নাও বিচারকের শৃঙ্খল
অপেক্ষা করো আমার আসার জন্য।
হে সর্বশক্তিমান আমার বিচারক,
আমি আমার মুখ বন্ধ রাখবো।
কোনো কান্না আমার শক্ত করে আঁকড়ে ধরা ঠোঁট কে
ভেদ করে যন্ত্রণার ধ্বনি উচ্চারিত করবে না।
আমার আত্মা যখন এই শরীর ছেড়ে দিবে
তোমার বিচারালয়ে আমি হাজির হবো।
যা ইচ্ছে খুশি করো আমাকে নিয়ে
এই শরীরকে ক্ষতবিক্ষত করে দিও
অগ্নিতে দাহ করে পুঁড়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী বানিয়ে ফেলো।
তবে এইটুকু শুনো আমার প্রভু,
যাকে তুমি ভালোবাসো বলে পাঠিয়েছিলে
দীর্ঘ এই প্রসারিত জীবনের প্রতি পদে
হাজারো পথ পাড় করিলাম আমি।
কোথায় যাবো আমি, কোথায় নিজেকে লুকাবো?
তোমার সেই নরকের অতলের বেদনাময় স্বর্গীয় নারী
পুঁড়িয়েছে আমার হৃদয় নরকের অগ্নিতে
আমি নরক বিদারিত অগ্নিপুরুষ
পৌরাণিক দাতার আজন্মকালের শৌর্য কবি।