তোমাদের নীতিবাক্যের প্রলাপ
মগজে ছুটে চলা অজস্র প্রাণের সংহারক
কোমল নিঃশব্দের মতো লাফিয়ে উঠা
জো-হুকুমের চাটুকার অসুরপতিরা,
আমি আঘাত হানব রক্তে হৃদয় টুকরো করে;
আর মেটাব তীব্র জ্বালা, ধরে ওঠা ঘৃণা;
মুমূর্ষু রোগীর মতো নুয়ে পরা আত্মাদর নয়
আমি নাড়া দিই পৃথিবীর এপার-ওপার
ভূতল হতে সমুদ্রের গভীর তলদেশ হয়ে;
আমি বিচরণ করি দিব্যি শরীর নিয়ে
উদ্ধত আমার চব্বিশ বছর বয়স।
এত প্রাণ! এত মৃত্যু! কোমল জীবনাবসান!
তোমরা বাজাও তীব্র দামামা
পেটাও মোটা মাথাওয়ালাদের খুলি
সাজানো কক্ষ, পরিপাটি যত গণমান্য
বৈঠকখানার জটিল সব অস্পষ্ট কথারমালা!
উল্টেপাল্টে নাড়া দিয়ে জানাও সবাইকে
আমি তো হয়ে গেছি নিরব কণ্ঠস্বর!
ক্রোধে-ক্ষোভে ভরা যন্ত্রণাহত ঝড়
অথবা আকাশের তীব্র ক্রোধে ঝলকানো বিদ্যুৎ
পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠে কালো মাটির ধুলি;
ঐসব তাদের উড়িয়ে দিব শিয়াল চতুরতা।
ফুলের মতো অস্তিত্বে আমার স্বীকার নেই
হাসপাতালে শায়িত হাত, পা কাটা পুরুষ বীর
জীর্ণশীর্ণ নুয়ে পরা প্রবাল বীরঙ্গনা, নারী।
পেশি মাংসের স্ফীত এই সমাহার
গোঙায় এবং মোচড়ায়
এমন একটা জড়পিণ্ড, সে কী চায়?
পিণ্ড, তবুও আকাঙ্ক্ষা তার হাজার।
এই প্রেম, ক্ষীণ না প্রবল?
আমি দাঁড়াই তিতাস নদীর পাড়ে
তীব্র নভেম্বর ক্ষীণ বাতাসে
এ দেহ কি ধরবে প্রবল প্রেম?
নাকি প্রেম না অ-প্রেম, কী হবে কী?
হয়তো তা হবে বিনীত,ছোট্ট প্রেম;
আমি চিৎকার করে উঠি
হৃদয়ের মসজিদে মুয়াজ্জিনের আযানের আগুণের ধ্বনি
শব্দের, ধ্বনির ঝলসানো যুদ্ধের বীর সৈনিকেরা
নীতিবাক্যের প্রলাপধারী পালাতে চাইছে
আগুণ লাগা বাড়ি হতে শিশুদের মতো।
এত অজস্র প্রাণের সংহারক
খোলসে লেপ্টে থাকা পলেস্তারা খসে পড়েছে
দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে নিঃশব্দ নিরবে
ক্রন্দিত হও, চিৎকার করে উঠো
প্রথম শ্রেণিতে বসে থাকা তর্কবাগীশরা
যুগ যুগ শতাব্দীকালে
যদি পারো এক অন্তিম চিৎকারে ;
আমাকে অগ্নিদাহে নিষ্ঠুর আমি সর্বত্রব্যাপী।