'এলো ফাল্গুন', 'এলো ফাল্গুন'--
ঐ ডাকিতেছে বুনো পাখী;
করি' গুনগুন, দিয়ে মধুচুম্
ভ্রমর পরাগে পাতে রাখী।
দখিনা মলয় ধীর লয়ে বয়,
প্রাণে দিয়ে যায় সুখ পরশ;
যেন বলে যায়, 'আজিকে নাহয়
অন্তরে লভো হৃদি-হরষ।'
বনের বকুল, আমের মুকুল
বাতাসে বিলায় মধুর ঘ্রাণ;
সাদা কাশফুল, ছোট বুলবুল
তুলেছে সুরের চটুল তান।
কৃষ্ণচূড়াতে, লতাতে পাতাতে
লাগে রক্তের লাল বরণ;
কাকডাকা প্রাতে, ভেজা আঙ্গিনাতে
ছোট দুবঘাসে ধোও চরন।
ছোট বনফুল, বুনো শোয়াকুল
মেলিছে নিজেরে বনমাঝে;
তোল্ ওরে তোল্, দু'টি হাতে তোল্,
সাজরে আজিকে ফুলসাজে।
ক্ষীণকায়া নদী বহে নিরবধি,
কুলুকুলু রব ওই আসে;
স্নান কর যদি, নাহি কোন ক্ষতি
মেতে ওঠো আজি উচ্ছাসে।
দিনে প্রভাকর, রাতে সুধাকর
দূর আকাশেতে দেয় কিরণ;
ভাসে জলধর, হাসে মধুকর,
মোরাও হাসিব-- করেছি পণ।
কচি কিশলয়, তারকানিচয়
ঘোষিতেছে কার আগমনী!
সারা ধরাময় শুধু তারি জয়
বাজিয়া চলিছে রণরণি।
সাগরের তটে, প্রকৃতির পটে
এলো ফাল্গুন এই ভবে;
হৃদয়ের ঘাটে চলো ঘনঘটে
বসন্তবরণ করি সবে।
© আজিজুর রহমান খান