চারিদিক টা কেমন অন্ধকার হয়ে আসছে আমার!
শীতার্ত রাত্রির জমাট বাঁধা কষ্ট গলায়!
বুকের ভিতরে হু হু করা শালবন বিহারের বাতাস!
বিশাল পৃথিবীটা অচেনা...কেমন অপার্থিব মনে হচ্ছে!
দূর থেকে ভেসে আসা ডাহুকের কান্না বুকে নিয়ে
হিমালয়ের মতো প্রতীক্ষায় আছি।
যতদূর চোখ যায়...তুমি নেই কোথাও!
তোমার গন্ধও নেই আমার ভূবনে!
বিস্তীর্ণ রাত্রির অমানিশায় তলিয়ে যাচ্ছি!
পড়ে যাওয়ার ভয়ের মতো স্বপ্নগুলি গ্রাস করছে সমস্ত অস্তিত্ব যেন!
অস্থির দিশাহীন আমি পালাতে চাচ্ছি তোমার দেয়া স্মৃতির কাছ থেকে!
যেন বাঘের থাবায় হরিন ছানা আমি!
চোখ বন্ধ করে ছুটছি প্রানপনে...বাঁচার আশায়!
তুমি কোথায় দেবী? খুঁজে পাচ্ছিনা তো কোথাও!
স্মৃতি চাই না...আমি, তোমাকে চাই।
আজকাল তুমি খোঁজ না আমায়!
নির্ঘুম রাত্রিগুলো তে আমি একাকী ঘুরে বেড়াই!
এই সাগরের ঠাণ্ডা বাতাস আর ওই
কালো আকাশের তারারা আমার সঙ্গী এখন!
তোমার শহর থেকে বহুদূরে নিস্তব্ধ এই জনপদে
আমি একাকী হেটে বেড়াই!
অন্ধকারে লুকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলি,
ফেলে যাওয়া স্মৃতিগুলি হাতড়ে খুজিঃ
তোমার প্রেমময় চোখ,
আমার ঘুম না আশা কালো চোখে তোমার ঠোঁটেলা স্পর্শ,
আমার আঙ্গুলগুলো নিয়ে তোমার আঙ্গুলের খেলা,
তোমার নিঃশ্বাসের গন্ধ দিয়ে নেশার্ত করে
আমাকে তছ্নছ করা!
মনে করতে চেষ্টা করি সেই সব স্মৃতি
যেখানে তুমি ছিলে আমার, আর আমি
তোমার মায়াবী মুখটাকে আঁকার চেষ্টা করেছিলাম!
তোমার হরিনী চোখটার ভিতর দিয়ে তোমাকে ছুঁতে চেয়েছিলাম!
তোমার দাঁত আর ঠোঁটের রক্তাভ – শুভ্র নেশায় মাতাল হয়েছিলাম!
তোমার স্তনবৃন্তের বেগুনী আভায় আর মসৃণ ত্বকের পিচ্ছিল মায়ায়
কাঞ্চনজঙ্ঘা থেকে পিছলে বঙ্গপসাগরে গিয়ে পড়েছিলাম!
স্মৃতিগুলির উত্তাল স্রোত একটার পর একটা
যখন আঘাত করতে থাকে আমার ঘাটে,
আমি দিশেহারা হই, অস্থিরতা বাড়তে থাকে
প্রতিটা আঘাতে। ভিতরটা ভাঙ্গতে থাকে,
কাঁচের মতো ঝনঝন শব্দে, অনুভব করতে থাকি
প্রতিটা কাঁচবিন্দুর ভাঙ্গনের বেদনা!
আমি ক্লান্ত আজ দেবী।
সারারাত একাকী হেঁটে ঢলে পরি তাই, এই সমুদ্র কিনারে...
একফোঁটা রোদ্দুরের আশায়! শীতার্ত নিঃস্ব আমি ব্যাকুল হয়ে
প্রতীক্ষায় থাকি তোমার নীল উষ্ণতার জন্য,
তোমার বেগুনী আলিঙ্গনের জন্য, তোমার নিঃশ্বাসের আদীম গন্ধের জন্য!
আরতো পারি না!
এই বনবাস... এই সুতীব্র বিরহ আর কতকাল বইতে হবে আমায়!
আমিতো খুঁজে খুঁজে কাতর!
কত্তদিন তুমি আমায় খুঁজ না!