তোমাকে পাওয়ার জন্য
কত পুরুষ-পুরুষত্তম কাল করেছি ধ্যান
উদ্দ্যোম নৃত্যলীলায় কামনার রসে হয়েছি সিক্ত
অজ্ঞানতা- সম্বিত ফিরে অনুভব দৃঢ় অস্তিত্ব
চিন্তিত চিত্তে স্পষ্ট করেছি তোমার স্থান ।
তোমাকে পাওয়ার জন্য
পত্র পল্লবে সজ্জিত স্থির বৃক্ষ
অনন্ত শূন্যে সৃষ্টির বলয় ঘূর্ণায়মান অপেক্ষা
অবিনশ্বর নয় চেয়েছি নশ্বরতা
পুষ্প-বৃক্ষে পরিপূর্ণ হয়েছি ফলজ বীর্যে ।
তোমাকে পাওয়ার জন্য
রুপান্তরিত বস্তুসীমায় পরিবর্তিত কত রুপ
অপলক দৃষ্টি পেরিয়েছে কত দিগন্তসীমা
জগতলীলা মিথ নশ্বর বিনশ্বরতায়
জন্ম-জন্মান্তরে নিয়েছি কত বৈচিত্র্যপাঠ ।
তোমাকে পাওয়ার জন্য
ব্যর্থ অস্থির হৃদয় সত্তা হয়েছে নিষ্ক্রিয়
নৈর্ব্যক্তিক অব্যক্ত ভাষা হারিয়েছে পথ
চঞ্চলতা বিলুপ্ত স্থির বসেছি চৈতিধ্যানে
ভূলুণ্ঠিত দেহ দিব্য ধ্যানে করেছি উৎসর্গ ।
তোমাকে পাওয়ার জন্য
শৈল্পিক চেতনা রুদ্ধ করে নিম্নবর্গীয় রূপ
নিরন্তর করেছি বিরাজ দ্বৈতসত্ত্বায়
ঢেউয়ের পর ঢেউ প্লাবিত সিঞ্চন করেছি জল
উন্মুক্তলীলায় ধ্বংস করেছি চিরন্তন প্রজ্ঞা ।
তোমাকে পাওয়ার জন্য
অস্তমিত সূর্যের অবয়বে রক্তিম
নিশ্চুপ অন্ধকার প্রেতাত্মার নিরবচ্ছিন্ন সঙ্গী
পৈশাচিকতার মানদণ্ডে উত্তেজিত উদগ্রীব
খোলস পাল্টে মোকাবিলা চিরন্তন ধ্বংসের ।
তোমাকে পাওয়ার জন্য
ব্যয়িত বাক্য শব্দ গুচ্ছ করেছি পাকচক্র
হেঁটেছি বহু ক্রোশ তন্দ্রাছন্ন ক্লান্ত তাপক্লিষ্টে
স্পষ্ট নিয়ম অনির্ধারিত শতাব্দির পর শতাব্দী
বিসর্জিত জীবনানন্দ আবদ্ধ কৃত্তিম গোলক বৃত্তে ।
তোমাকে পাওয়ার জন্য
সয়েছি অসহিষ্ণু বেদনা এপাশ-ওপাশ
পড়েছে প্রহার তীক্ষ্ণ-বাক্য বিক্ষত গোলোকবৃত্ত
উথলে উঠেছে নোনা রসের তীব্র বান
আকুল বিসম উজ্জল জ্বালায় কেটেছে অর্ধঅন্ধকার ।
তোমাকে পাওয়ার জন্য
অপ্রাপ্য মর্যাদা তিরস্কৃত ক্ষণকাল
নির্গত বিবেকবোধ স্তব্ধে হয়েছিল স্থির
আবদ্ধজলে করেছি পার তৃষিতবস্থা
অগ্নিশ্বাস নির্গমনে পুড়েছে জগতপিন্ড ।