বিস্তীর্ণ প্রান্তর অবারিত স্বপ্নের এক অদেখা ছবি। সবুজ মায়া, উজ্জ্বল আকাশের নীলিমা, হালকা বাতাসে ভেসে থাকা মুক্তির গন্ধ। প্রতিটি শ্যামল ভূমি, প্রতিটি দিগন্তরেখা এক গভীর আকাঙ্ক্ষার প্রতিচ্ছবি। বিশালতা এত নীরব হতে পারে, এই প্রকৃতির নিবিড় নিস্তব্ধতা শিখিয়ে দেয়। প্রতিটি আলোকিত মুহূর্তে, বাতাসের প্রতিটি ছোঁয়ায়, অনুভব করা যায় গভীর তৃষ্ণা—মুক্তির, আর বেঁচে থাকার।
প্রান্তরের সৌন্দর্য যেন এক মৌলিক আকর্ষণ। বিস্তীর্ণ ভূমির শ্যামলিমায় লুকিয়ে থাকে জীবনের নিস্তরঙ্গ আকাঙ্ক্ষা। সে আকাঙ্ক্ষা কখনো বাতাসের সঙ্গে ভেসে আসে, কখনো রোদের আলোয় ঝলমল করে। জীবনের প্রতিটি মোড়ে এই প্রান্তরের সৌন্দর্য মানুষকে থামিয়ে দেয়, বলে—তোমার প্রতিটি আশা প্রান্তরের মধ্যেই লুকিয়ে আছে। এখানে কোনো শব্দ নেই, কেবল বাতাস আর মাটির নীরবতার মধ্যে এক গভীর ভাষা। সেই ভাষার প্রতিটি শব্দ মনকে তার নিজের সঙ্গে পরিচিত করে।
শুধু চোখের দৃষ্টি নয়, এই প্রান্তর ছুঁয়ে যায় আত্মার গভীরে। নীরবতার মাঝে লুকিয়ে থাকা অসীম ছোঁয়ায় মন হারায় পথ। প্রকৃতির সাথে একাত্ম হয়ে, প্রতিটি মুহূর্তে অনুভব অমরত্বের স্পর্শ। প্রকৃতি আর অন্তর একসঙ্গে বুনে চলে নিঃশব্দ কথোপকথন। অজানা কোনো অতীতের সুর, যা বারবার ফিরিয়ে আনে স্বপ্নের রূপ। সুরের প্রতিটি নোটে মিশে আছে এক অনন্ত আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। সময় থেমে যায়, মানুষের অন্তর নিরবতার মাঝেই মুক্তি খুঁজে পায়।
প্রান্তরের শূন্যতাকে আলিঙ্গন করে অদৃশ্য ভালোবাসার ঢেউ। প্রতিটি তৃণে মিশে আছে জীবনের গভীরতম সত্য, নীরব প্রকৃতির মাঝে অনুভব করে নিজস্ব সত্তা, অনুরণনে বাজে এক অদম্য মুক্তির গান। এই বিস্তীর্ণ প্রান্তরই শেখায় বেঁচে থাকার মর্ম। নিস্তব্ধতার মাঝে লুকিয়ে থাকা আকাঙ্ক্ষা, সবকিছুর ঊর্ধ্বে নিয়ে যায়।
প্রকৃতির মাঝেই লুকিয়ে সব স্বপ্নের পথ, মানুষ ইচ্ছার জাল বুনে নিরন্তর। প্রান্তরের প্রতিটি আলোর কণা ডাকে দূরের দিকে, হৃদয়ে জাগায় নতুন সম্ভাবনার বার্তা।