পৃথিবীর যত মরা শকুন, থিতিয়ে পড়া রক্তের তৃষ্ণা নিয়ে ফিরে আসে,
বাংলার আকাশে জেগে ওঠে তাদের নতুন ডানা—নিশ্চুপ ও নির্দয়,
শুকনো ঘাসের ওপর কুয়াশার মতো ছড়িয়ে পড়ে এক বিষাক্ত শ্বাস,
অপরাধের চোরাস্রোতে ভাসে প্রজন্মের স্বপ্ন, বিলীন হয় আলোর পথ।

আকাশের নীলবুক ভেদ করে উড়ে যায় তাদের কঠিন ছায়া,
হতাশার কালো চাদরে ঢেকে দেয় ভবিষ্যতের সব আলো,
দুর্বলতার কান্না শুনে ফিরে আসে তাদের ঠোঁটে অমোঘ ক্ষুধা,
অধিকার, রক্ত, আর সবুজ পাতার জীবনের মৃত্যু গুনে তারা ।

সীমানাহীন মাঠের বুকে ছড়িয়ে থাকে তাদের নিঃশ্বাসের বিষ,
ভাঙাচোরা মাঠের কোণে লুকিয়ে খোঁজে দুর্বলতার গন্ধ,
চোখের ভ্রান্তি, তৃপ্ত শকুনেরা বাংলার মাটি চিবিয়ে রাখে গলায়,
মৃতপ্রায় মানুষদের আর্তনাদে তোলপাড় হয় মাঠের প্রান্তর।

ভরসার পৃথিবী, বিভ্রান্ত পথের পথিকের মতো,
রাতের অন্ধকারে নীরব দাঁড়ায় মানবতার সমাধির পাশে,
কোথায় ছুটে যাবে কেউ জানে না, কোথায় লুকাবে আজ—
শকুনেরা এসে বসে সকলের মাথার ওপরে অবিচল।

ধীরগতিতে তারা আমাদের স্বপ্নকে ছিঁড়ে খায় রোজ,
প্রতিটি নিঃশ্বাসে বিষ ঢেলে তৈরি করে আরও শূন্যতা,
কালের গর্ভে হারিয়ে যায় সবুজ মাঠ, উড়ন্ত নীলাভ সূর্য,
অপরাধের কবর হয়ে আজ বাংলার আকাশ দোল খায়।

শকুনেরা ফিরে আসে বারবার, ছেয়ে যায় সবুজ প্রান্তর আর স্বপ্ন,  
অন্তহীন ক্ষুধার চিহ্ন,  ভূমির প্রতিটি কণা কাঁপে হিংস্র পায়ের তলে,  
স্বপ্নগুলো হারিয়ে যায় গহ্বরের অতলে, চাপা পড়ে বাঁচার লড়াই,  
মানবতার কণ্ঠস্বর স্তব্ধ হয়ে থাকে, নীরব রাতের প্রতীক্ষায়।

এই বাংলার আকাশ, মাতৃসম মাটির বুক—
কখনো কি তাদের চিৎকারে জাগবে, জানাবে অভিশাপ?
মৃত শকুনেরা ফিরবে তাদের নিজের কালো গহ্বরে,
ভালোবাসা আর সততার সুর ছড়াবে বাংলার মাটিতে।