আমাকে প্রশ্ন করা হলো
বার বার কেন ফিরে আসেন এই ধুসর পল্লী পাড়াগাঁয়
কেমন করে বুকে ভরে রাখেন এত অকৃপণ ভালবাসা
বেহুদা দাঙ্গায় পা হারালেন, বাবাকে হারালেন পার্টিবাজ মস্তানদের হাতে
ডেঙ্গু জ্বর প্রায় নিয়েই গিয়েছিল আপনার সোনামণিরে
এর পরেও এই দেশে থাকেন কি করে?
আপনার সাধের বকুলতলা তো আর নেই
বিস্তীর্ণ জামের বাগান এখন ইটের ভাটাবাড়ী
উদাস দুপুরে বাঁশ বনের উদরে ঘুঘু তো আর ডাকে না
এর পরেও এই ধুলিময় জীর্ণ জনপদ ভালবাসেন কি করে
প্রবাসের নিখুঁত পরিপাটি অট্টালিকা ছেড়ে
এই মৃতপ্রায় তিস্তার তীরে বাসা বাধেন কি করে?
উত্তর দিলাম শান্ত স্বরে, তবুও ভাল লাগে চাচার অমুল্য রক্তে কেনা
আমার গ্রামের ধুলিকণা
আছে অনেক দিনের চেনা
গোবিন্দ কাকার মত দেশী মানুষেরা
মায়ের সবুজ সাথীর সাথী, চাচার গেরিলা যুদ্ধের যোদ্ধা গোবিন্দ কাকা
ধান ক্ষেতের আইল পথে এক পায়ে এগিয়ে আসেন কাকা গোবিন্দ চরণ
কথা বলেন অতি সাধারন অন্তরের গহীন থেকে
দেশ যার ভালবাসায়, স্নেহ যার চোখের মায়ায়,
“ তোমাক দেখিবার আনু বাহে, আর কোনবা দিন বাড়ি আসিবেন, মরি যদি যাঁও,
তোমাক দেখিবার আনু বাহে, মন জুরি গ্যালো, হামার দ্যাশের মানুষ বেদ্যাশ থাকি আইসে,
শেকরের বড় টান বাহে। ভালো আছেন বাহে? বহুদিন বাঁচি থাকেন।
আর কোথায় কে আছে বলো
এমন ছল ছল চোখে টেনে নেবে অন্তরের এত কাছে
কোথায় পাবে বল এমন মহান মুক্তিযোদ্ধার সান্নিধ্য
যার অধীনতায় তোমার আমার স্বাধীনতা
ভালবাসবো না কেন বল, প্রান খুলে হাসব না কেন বলো,
বার বার ফিরে আসবো না কেন বলো।
বিঃদ্রঃ কবিতাটি সংকলন করে সম্প্রসারিত আকারে আবার প্রকাশিত হলো। ধন্যবাদ