বন্ধুদের আজ গল্প বলি,
সবাই শুনো কান খুলি।
গল্পের এবার নাম বলি,
একটি ফুল দুইটি মালি।
গল্প এটা- নয় যে গাথা,
শুনলে পরে ঘুরবে মাথা।
গল্পে মোর নায়িকা আছে,
নায়ক ঘুরে পিছে পিছে।
নায়িকার নাম বুলবুলি,
স্বভাবটা তার চুলচুলি।
নায়ক আছে দুই খানা,
না বললে বুঝবে না।
নায়িকার ছিল দুটি ফোন,
দুইটি নায়ক দিয়েছে মন।
প্রথম নায়ক বলে তারে,
ভালোবাসিস কত মোরে।
নায়িকা বলে ওরে জানু,
তোর কোলে স্বর্গ মানু।
তুই মোর জানের জান,
তোরে ছাড়া বৃথা প্রান।
নায়ক ভায়া লাফিয়ে উঠে,
ধরল বুঝি এবার ভুতে।
ওরে মোর চুলবুলি,
বলতো এবার প্রাণ খুলি।
আমি তোরে কেমন লাগি?
তোর জন্য কেমন সাজি?
নায়িকা বলে ওরে স্বজন,
তুই মোর বংশি মদন।
মোর হৃদয়ের গোলাপ তাজা,
স্বপ্নে আসা হীরক রাজা।
নায়ক শুনে পাগল পারা,
বলে তুই মোর নয়ন তারা।
নায়িকা এবার বলে স্বজন,
আমার আছে কিছু প্রয়োজন।
নায়ক বলে ওরে মোর চুলবুলি।
বল না তুই সব খুলি,
কি তোর লাগবে প্রিয়া?
তুই যে মোর আপন হিয়া।
আজ থেকে যা লাগবে তোর,
সব কিছুই দায়িত্ব মোর।
নায়িকা এবার উঠে বলে,
বলবো সবই সময় এলে।
ঠিক দুপুরে ঠিন ঠিন,
ফোন বাজলো রিন ঝিন।
দ্বিতীয় নায়ক লাইনে এবার,
নায়িকা বলে ফোন বাবার।
এখন তবে যাই সুজন,
বসে শুনো পাখির কূজন।
প্রথম নায়ক দিলো টাটা,
নায়িকা এবার হল ফাকা।
নায়িকা এবার মিস কল মারে,
দ্বিতীয় নায়ক ছিলো ঘরে।
মিস কল মারতে দেরি।
ব্যাক কল হয় তড়িঘড়ি।
নায়িকা এবার বলে হ্যালো,
দ্বিতীয় নায়ক লাইনে ছিলো।
নায়ক বলে ওরে মোর টুনটুনি,
কোথায় ছিলি বল শুনি?
ওরে মোর পরাণ পাখি,
তোরে ছেরে কোথায় থাকি!
তুই মোর জীবন মাঝি,
তোর হৃদয়ে সদা থাকি।
এই শুনে নায়ক ভাই,
গোঁফে তৈল মুখে হাই।
ওরে মোর টুনটুনি,
দেখা দিবি কোই শুনি?
হায়রে মোর মাথার তাজ,
দেখা দিবো পার্কে আজ।
যখন হল বিকাল বেলা,
দুজনে পার্কের গোলাপ তলা।
কি আর বলি হায় হায়,
নায়ক নায়িকা নিরালায়।
নায়ক বলে ওগো প্রিয়ে,
স্বপ্ন দেখিস মোরে নিয়ে?
ওরে মোর নয়ন মণি,
তুই যে মোর সোনার খনি।
তুই আসিস স্বপ্নে আমার,
সাদা ঘোরায় রাজ কুমার।
দেখতে বাহুবলির মহারাজ,
ডানা হাওয়ায় পক্ষীরাজ।
এই শুনে নায়ক ভাই,
নেচে উঠে থাই থাই।
নায়ক বলে ওরে মোর প্রিয়তমা,
মনটা দিছি তোরে জমা।
তুই যে মোর আশার আলো,
পাশে থাকলে সবই ভালো।
তুই যে নারী বড়ই স্বতী,
মোর মনের আগরবাতি।
আমি তোর হবো পতি,
তুই মোর মোমবাতি।
এই ভাবে চলে কথা,
নায়িকা বলে অনেক ব্যথা!
ওরে মোর ফুলটুসি,
তুই যে মোর প্রাণের খুশি।
কি আছে তোর ব্যথা?
খুলে বল মোরে হেথা।
ওরে মোর প্রিয়তম,
হাতে আছে পয়সা কম।
জিনিস মোর অনেক লাগে,
তোর প্রিয়া কোথায় পাবে?
নায়ক বলে প্রিয়তমা,
সবই দিলাম তোরে জমা।
আজ থেকে তোর যা লাগে,
সব কিছু এই বান্দা দিবে।
ফিংগে পাখি নাচে গাছে,
নায়কের পকেট ওজন আছে।
কথায় কথায় লাল রবি,
বেলা গেল ডুবি ডুবি।
নায়িকা বলে এখন চলি,
নায়ক বলে কি লাগবে দাও বলি।
নায়িকা বলে সময় হলে,
সবই তোরে দিবো বলে।
রাত আসে দিন যায়,
নায়ক দুটির হায় হায়!
নায়িকা শুধু করে ছল,
ঘন ঘন মিস কল।
যখন তখন ফোন আসে,
নায়ক বলে কথা হেসে।
নায়ক দুটি পাগল পারা,
বদলে গেছে জীবন ধারা।
নায়িকা শুধু দেয় ফুল,
নায়করা দেয় সোনার দুল।
আরো দেয় মতির মালা,
দুটি হাতে সোনার বালা।
নায়িকার কথা কুল কুল,
নায়করা সব করে ভূল।
প্রথম নায়ক দিলে শাড়ী,
দ্বিতীয় নায়ক টাইটন ঘড়ি।
নায়করা ভাই দাওয়াৎ দিলে,
নায়িকা খালি ফুচকা গিলে।
আরো খায় ইটলি-ঢোশা,
বিরিয়ানি আর মাংস কসা।
নায়িকার সেবা করে,
নায়করা ভাই খেটে মরে।
এই ভাবে দিন যায়,
আমার মনে হায় হায়।
বন্ধুরা গল্প আর কত বলি!
কবির শেষ হবে কালি।
এবার তবে শেষ বলি,
একটি ফুল দুইটি মালি।
............. *............