চেনা ছবি

হিজোলের  ডাল ঝুলিছে পুকুরে
মাছরাঙা ধরিছে মাছ দুপুরে ,
ঐযে সাদা বক উড়ে যায় দুরে
বাতাস বহিছে মৃদু মন্দ সুরে ।

আকাশে মেঘের অবিরাম ছোটা
ঝিলের জলে শাপলা ফুল ফোটা ।
পানকৌড়ি‘ ডুব ঝাপুর ঝুপুর
এ যেন চেনা ছবি ক্লান্ত দুপুর ।।

মাঠে মাঠে গরু' পাল খাচ্ছে ঘাস
চাষীরা জমিতে  দিচ্ছে কালচাষ ।
পাট ক্ষেতে ফড়িং পোকাড় নাচ
মাথার উপরে উড়ে গেলো বাঁজ ।

ঘুঘু পাখি ওগো! কোথা যাও শুনি ?
"রৌদ্র সৌহার্দ্যে নিজ বাসা বুনি "।
শালিক  ব্যস্ত   সময়  টানাটানি
"নীড়ে ছোট ছানা খুজি দানাপানি "।
দোয়েল ছুটছে হলদে টিয়ের বিয়ে
হাতে নেই যে সময়, উপহার নিয়ে।
কোকিল তুমি ঘুরছে একা শুধু?
"খুজিতেছি হারিয়ে যাওয়া বধু।"

কলার লালচে মোঁচা দিচ্ছে উকিঁ
আমেরপাতা নৌকা ভাসায় খুকি।
লতাপাতা শাড়ী কলাপাতা চুল
পরনে খুকির ,নাকে ঘাসফুল ।
কানে দুল খোপায় ধুতুরাফুল
পায়ে কুঞ্জলতা রূপে যে অতুল।

মাটি দিয়ে খেলা ছোট ছোট হাড়ি
সখিদের নিয়ে কতো রান্নাবাঁড়ি
হই--চই  হই--হই    অফুরন্ত
শৈশব এমনি অম্লান দূরন্ত ।

এই ছবি  চেনা, রক্ত  দিয়ে কেনা
মুক্তিসেনার কাছে মোদের দেনা।

তুমি শত্রূ বলো সাঁকী
আমায় তুমি শত্রূ বলিলে  সাঁকী
ডুমুর ফলে ঠোঁরাঙ্গালো যে পাখি!
বর্ষাভেজা কদম ফুলের শোভা
ব্যাথায় কাতর ভ্রমরবসা জবা ।।

পথের ধারে ধুতরাফুল  ফিকেঁ
সব ব্যথা কেউ রাখে না যে লিখে
সখি তুমি আজি শত্রূ হলে  বুঝি
বর্নচোরা রঙ পেয়ে   যে  খুশি।

তুমি শাপলা জলে মৎস দেখোনি
জলে ভাসা হংস উচ্ছাস শেখোনি,
উত্তাল সমুদ্রে হাতটি রাখোনি ,
যৌবন তৃষ্ঞা্য় রঙতো মখোনি।

আমায়  তুমি   সুতীব্র   ভাষায়
আহত করে, মখমলে  আশায়
অর্থমূল্যে কিনে জীবন সমাচার
স্মৃতির সুতা বুনিছে নব্য স্বপ্নসার।।

মানুষ বড় একা  পরিজন  হীন
সখি তুমি কার ?  বন্ধন বিহীন
বর্ষা   বাদলের  শ্যামল   দিনে
মৌন অগ্নিঝরে এই  বরিষনে ।

তোমার তরে ঋনের পাল্লা ভারি
নষ্টের হাড়ি  হায় অবুঝ  নারী ।
মিথ্যাসেকে সত্যচেরা  শুভ্রবোল
জীবনচোরা এ মিথ্যা ঢাকঢোল।।

আকাশ জুড়িয়া কিসের তলোব
ভেঙ্গে চুড়ে পুন্জ মনের  কলোব
তুমি দিলে যে   চিতার  আগুন
আগুন ঝরিছে  শাওন  ফাগুন ।

কেঁদো  নাকো বেঁধো নাকো এলোচুল
মম স্পর্শে রাঙ্গা  তোমার  নাকফুল
আমায় তুমি   ভুলতে    নারী সাঁকী
বাঁশ বাগানে রিক্ত কোকিল পাখি ।।

পিছন ফিরতে  কেবা চায়  বলো
ভালোবাসা খুজতে চলনবিলে চলো
জীবন ভ্যাল্কিপনা তুমি সর্বনাশা
সৎ স্বপ্নবুনি  সোনালী  ভালোবাসা।।

দিবো  দিবো হয়নি দেওয়া  কিছু
তোমার লোভ  নিলো  যে   পিছু
ক্ষান্ত  হলো  ভালোবাসার  ছাই
ভ্রান্ত  পথের  ইতি , গুড  বাই।।

ঝিলের জলে
ঝিলের জলেতে শাপলা ফুটেছে
দামাল শিশুরা তুলতে ছুটেছে ,
মায়ের হাতেও একটি জুটেছে ।।

দোয়েল নাচিছে কদম ডালেতে
টেঙরা বেঁধেছে জেলের জালেতে,
হাঁসরা দাড়িয়ে ক্ষেতের আলেতে।।

আকাশে মেঘের দোপাটি মিছিল
বর্ষায় ভরিছে ডোবা,নদী, ঝিল,
চাষীরা বাধিঁছে কাটাপাট পিল।।

বহিছে পবন  ফিরবে  কখন
ছুটিছে পথিক হাঁটের  লগন,
মনের ভিতর কিসের  দহন।।

কলমি ফুল দুলিতেছে বাতাসে
মাছরাঙা,বক উড়িছে আকাশে,
পাখিরা ফিরবে কখন আবাসে।।

একটা নদী জল
একটা নদী জল ছল ছল
একটা স্মৃতি ভাসে অবিকল।
একটা  জীবন সময়   অল্প
যেন দুখিনীর দুঃখের গল্প।।
একটা নদী ভাঙ্গের শব্দ শুনী
একটা পাড়ে আপন স্বপ্ন বুনি।
একটা আকাশ নীল রঙ মাখা
একটা মনপাখি নেই যে পাখা ।
একটা ঘোড়া ছুটছে অবিরাম
কে জানে কোথায় তার লাগাম?
একটা পড়োজমির দ্বন্দ সংঘাত
আকাশে চাঁদ,নিচে যত রক্তপাত
একটা রাত বিধঘুটে  অন্ধকার
পূবের আলোর প্রত্যাশা সবার।
একটি পৃথিবী মানবের ঠিকানা
এখনও অনেক রহস্য অজানা,
একটি মনঘুড়ি শুধুই উড়ছে
একটি চাকা অবিরাম ঘুরছে।
একটি বাড়ি তিন মহলের ঘর
পাহাড় দাড়িয়ে স্থির ও অনড়।
একটা সময়  নিঝুম নির্ঘুম রাত
জোৎস্না ফুয়ারার পূর্নিমা চাঁদ।
একটা অসীম উদার আকাশ
নিঃস্বার্থ নির্মল বহিছে বাতাস।
একটা পিপাসা  যার নাম আশা
একটা মানুষ কত রকম ভাষা ।
একটা দুঃখ ভুলা যে যায় না
সুখের নাগাল কেউতো পায় না।
একটা ঘড়ি ঘুরছে টিক টিক
বুকের গহীনে শব্দ ধিক ধিক।
একটা ঘুম খুব যে  দরকার
বিনিদ্র রজনী কাটেনা যে আর।
একটা যমুনা  বাস্তূহারা কতো!
নদী সিকস্তির দুঃখ শত শত।

কচুপাতায় জল
কচুর পাতায় জল
রুপা ঢলে টলমল
মৌলবি কচুর পাতা
দাদার হাতের ছাতা।
মেঘ ভাঙ্গা জলে ঢল
ঝর-- ঝর --অবিরল
যাচ্ছে ভেসে ঝরাপাতা
উড়লো সখের ছাতা।।
বজ্রপাতে কাপে বুক
পাখিদের  নেই সুখ।
শ্রাবণ মেঘের খেলা
দেখিতে দেখিতে বেলা-
গেলো,পশ্চিমের কোলে
মাঠ ঘাট ভরে জলে ।
কচুর  পাতায়  জল
ঝর ঝর-- অবিরল ।
ধানের ক্ষেতের ব্যাঙ
ডাকে  ঘ্যাঙঘ্যোর  ঘ্যাঙ
ভেজা দোয়েল পাখি
কাউকে আবার ডাকি
প্রিয়া  গেলো যে কোথায়
কৃঞ  খুজিছে রাধায়।

অযাচিত চুমো
তোমায় আমি অযাচিত চুমো দিয়ে ছিলাম
তুমি বলতে পারো তাহার অর্ঘ্য মুল্য প্রনাম
ওজন কত ছিলো তার আন্দায কি তুমি পারো
বাটখারা মিলবে নাকো চেষ্টা যদিও করো ।
সেদিন ভারি বৃষ্টি ছিলো খাল বিল তলো তলো
রিক্সায় ফেরার পথে চুমো তোমায় দিতে হলো
এমনি ভাবে চলতে মোদের একুই রকম মধুর খেলা
একে বেঁকে বসেছিলাম নদীর ধারে দুপুর বেলা
কাব্য খুজি নাব্য নদে উপছে পড়ার অথৈ ঢেউ
চুমো সঙ্গমে মোরা ছাড়া আর ছিলো না কেউ ।
রোদের আকাশ বোধের নিঃশ্বাস সব সমোস্বর
জলের  নাচনে  পদ্ম  কাঁপে  নদী  চরে   ঝড়।
রক্তজবা অর্ঘ্য প্রভায় সুরের গল্প এমনি শুনি
চুমো দেওয়ার জমিনেতে প্রেমের শষ্য বুনি ।
পাশাপাশি সিটে বসে ঢাকায় মোরা গেলাম ,
চুমো দেওয়ার  ইচ্ছা নিয়ে লুটু পুটি খেলাম ।
লোক লজ্জা লোক ভয় ছিলো যে তোমার ইষৎ
হারিয়ে তুমি রইলো হ্নদে এইতো বিশ্ব বৃহৎ।

হেমন্তের হিম

হেমন্তের হিম ছড়িয়ে
বৃষ্ঠি এলো আজ,
কৃষানের নিড়ানি দেয়া
বন্ধ হলো কাজ।

মাঠে গরু চরছে না যে
গোয়াল ঘরে রাখা ,
পাখিরা উড়েছে না যে
ভেজা ওদের পাখা ?

শেয়াল ডাক শুনছি নাতো
ঘেপটি মেরে আছে?
পদ্ম  পাতায় বৃষ্টি পড়ে
হাঁসগুলি যে ভাসে।

ঝিরি ঝিরি বাতাস,আর
বৃষ্টি গুরু গুরু,
হিমকুহেলীর রঙ ছড়িয়ে
হেমন্ত যে শুরু।

শারদীয় এলোকাশফুল
আজ শারদীয় প্রভাতে যুথিঁ টগর দেখিনী তবু
শিন শিন বায়ে দোলে এলোকাশফুল কভু
দেখিতে ভুলিনী ,
শাপলা শালুক ফুলে সেজেছে জল তটিনীর পাটি ,
যমুনার কিনার ধরে একা একা হ্নদয় জুড়ে হাটি।
কলমির গায়ে লেগে থাকে সোনাভরা রোদ,
যেন নিশির শিশিরে সিক্ত হয় মানবের ক্রোধ।
মসৃন বালিতে লেগে থাকে চলোনের দাগ ,
শো-শো শব্দে উড়ে গেলো সাদা বকের ঝাঁক ।
নদী সিকস্তিদের ঘরের চালে লাউ এর ডগার হাসি,
ইহাদেরি কতো যে স্বপ্ন গিয়াছে স্রোতে ভাসি।
তবু শরত জোগিছে চাষীদের  বুকে হেমন্তে যাবার সুর
রবি শষ্যের সোনালী গন্ধ আর কতো দুর আর কতো দুর।
আশ্বিন হাওয়া পন্জিতো মনে সন্ঞিত করে আশা ,
রোদেলা আকাশে মেঘের সাকাশে জেগেছে ভালবাসা।
ভাদরের শেষে আশিন আবেষে কে গো তুমি বালিকা,
তোমার খোজেতে কাদিঁয়া ফিরিছে করুন শেফালিকা।
বোড়ইফুলে ভোমরা নাচে চোড়ই পাখি গন্ধে হাসে
কাব্যবোধের যতটুকু মিশে আছে শরতকাশে।