শোনো ...... তোমরা আমার বিয়ে দিয়োনা....
আমি লেখাপড়া করতে চাই ।
চিৎকার করে বলেছিল মেয়েটি ।
কিন্তু না !
কেউ তার কথায় কর্ণপাত করেনি সেদিন।
ষোলো বছরের এই নব কৈশোর মেয়েটির সাথে
বত্রিশ বছরের এক চাকুরিজীবী ছেলের বিয়ে ঠিক করল
বাপ-মা ।
আর বিয়েও হয়ে গেল খুব শীঘ্রই ।
সমাজ ,আইন ,প্রশাসন কেউই কিছু করল না।
এটাই স্বাভাবিক । এখন সে নববধূ । কারন -
কবি বলেছেন , "ফুল ফুটুক না ফুটুক তবু আজ বসন্ত" ।
কিন্তু নবদম্পতির এই বসন্তকে গ্রীষ্মের প্রবল
কালবৈশাখী ঝড়ের জগঝম্প এর মত
সবকিছু উলটপালট করে দিল মুহূর্তের মধ্যেই।
মাস পেরোতে না পেরোতেই ঘটে গেল
সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ।
অফিস থেকে ফেরার পথে রোড অ্যাক্সিডেন্টে
মারা গেল ছেলেটি ।
ভোরের শিশিরে ভেজা সদ্য পুষ্পিত মেয়েটি
এখন একা।
সমাজকে কেড়ে নিয়েছে
তার রঙিন বসন, হাতের শাঁখা, সিঁথির সিঁদুর
আর পড়িয়ে দিয়েছে একখানা সাদা থান।
হাজারেরও বেশি নিয়মকানুন
চাপিয়ে দিয়েছে ঐটুকু একটি নিষ্পাপ
মেয়ের কাঁধে ।
এখানেই শেষ নয় গল্পটি
একদিন শাশুড়ি মায়ের অনুমতি পেয়ে
বাইরে বেরিয়ে ছিল মেয়েটি। আর তখনই
কালো মুখোশ পরা কয়েকজন যুবক
এক ঝটকায় খুলে নিল
তার শরীরের বসন।
একটা সদ্য বিধবা , কৈশর, নগ্ন মেয়ে
চিৎকার করছে -"বাঁচাও..... বাঁচাও.....
তোমরা আমায় ছেড়ে দাও.....।"
কিন্তূ না! আজও তার কথায় কেউ কান দিল না,
যা ঘটার নয় তাই ঘটল
মেয়েটির জীবনে । সমাজ মুখ ফেরালো
তার থেকে। সে এখন সমাজ পরিত্যক্তা।
কি এমন দোষ করেছিল
ওই নিষ্পাপ সরল মেয়েটি ?
তার এই অবস্থার জন্য দায়ী কে ,
স্বার্থপর সমাজ, নাকি নিষ্ঠুর কলুষিত বাপ-মা?
না!
নীরব সমাজ এর উত্তর দেয়নি,
আর তা কখনো দেবেও না ।
শুধু এই মেয়েটি নয়,
কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাট থেকে বাংলায়
শত শত মেয়ের জীবনে
একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ।
আমরা কি পারিনা এই নিষ্ঠুর , কুসংস্কারাচ্ছন্ন
সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে?