ভালোবাসার নদী
অতীশ মুখার্জ্জী
ও নদী ! ও নদী !
খরস্রোতে বয়েই যাবি যদি
কেমনকরে দেখবি দুচোখ ভরে
সংসারের ভরা স্বপ্নছবি
গড়ে ওঠা তোরই দুপ্রান্তরে ?
" আমি কি আর সাধে সাধেই ছুটি ?
মনের মধ্যে উঠেছে ফুল ফুটি ।
সাগর আমায় ডাক দিয়েছে গানে
প্রতীক্ষায় আমার আলিঙ্গনের
টুকুন ঘরে ধরবেনা এই মন
সাগর ! কেবল সাগর চাই আমার
তার ঢেউয়ের পরে গড়ে নেব আমার সংসার ।"
নদীরে তুই থির হয়ে নয় একটুখানি দাঁড়া
স্রোতের টানে হোসনে পাগলপারা
বুঝিস কি তুই ঘর গড়ার মানে ?
যে গড়েছে সেই ঘরামীই জানে
স্বেদবিন্দু আর চোখের জলে
কতটা নুন থাকে
কাজের ফাঁকে ফাঁকে
তার আস্বাদ নিয়েছে তার জিভে
বিস্বাদে মুখ বেঁকেছে বারবার
তবুও তো মাটির সাথেই তার যত কারবার ।
সংসারটা একটুখানি দ্যাখ্ নিজের চোখে
কাঁটার সঙ্গে ফুলও ফোটে আনন্দে ও শোকে ।
হয়তো সাগর অনেক আয়তনে
জল অতলে অনেক রত্নরাজি
কিন্তু জানে কাজী
কত অশ্রু দিয়ে সাগর গড়া
নোনা পুরুষ ঢেউ তুলে যায় ব্যথার নিরশনে ।
বুকের উপর উথালপাতাল ঢেউ
সেই বুকেতে ফুল ফোটাতে পেরেছে কি কেউ ?
" আমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটলে অনেকখানি
বুঝিয়ে দিলে কতটা নুন আর ঠিক কতটা পানি
দিয়ে আমার স্বপ্নসাগর গড়া।
আমি কিন্তু মানুষ নই কবি ।
আমার এই আকুল হয়ে ছুটে চলার ছবি
যে দুটো চোখ ভরে তুমি দেখলে আমারে
ফোটালে যত সাদা রঙিন ফুল তোমার খামারে
কোথায় পেলে কৃষিকাজের এতো মিঠে জল ?
আমার সাগরপ্রীতির মাঝেও অনেকখানি বিচ্ছেদের ফল
নুন ফেলে তাই বিশুদ্ধ জল বুকে
মেঘ হয়ে ফের উড়ি
হয়তো একটু ঢাকা পড়ে চাঁদের বুকে চরকা কাটা বুড়ি
সেটুকুই তো তোমার সম্বল
সংসারের যত কাঁটা, যত ফুল ও ফল
আমিই ভরি সাগর সেঁচে তোমার মনের ভালোবাসার জল ।"